২০১৬ সালে বিশ্বে ২০০ পরিবেশবাদী নিহত, বাংলাদেশে ৭

বিশ্বজুড়ে পরিবেশ রক্ষার জন্য আন্দোলনকারীদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত ও হত্যা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০১৬ সালে বিশ্বে ২০০ জন পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশে নিহতের সংখ্যা ৭। বন, নদী দখল এবং পাইপলাইন, খনি ও বিভিন্ন উন্নয়নের নামে জমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় এসব পরিবেশবাদীদের হত্যা করা হয়েছে।

defender of the earth

লন্ডনভিত্তিক এনজিও গ্লোবাল উইটনেস প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৬ সালের এনভায়রনমেন্টাল ডিফেন্ডার্স শিরোনামে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে বছরটি গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে কখনও এতো বেশি সংখ্যক পরিবেশবাদীকে হত্যা করা হয়নি।

প্রতিবেদনটিতে, ২০১৬ সালে প্রায় ২০০জন পরিবেশবাদীকে হত্যার কথা বলা হয়েছে। পরিবেশবাদীদের জন্য বছরটি ছিল সবচেয়ে ভয়ংকর। আর চলতি বছর এ পর্যন্ত হত্যা করা হয়েছে ৯৮ জনকে। ২০১৫ সালে হত্যার ঘটনা ছিল ১৮৫জন।

সবচেয়ে বেশি হত্যার ঘটনা ঘটেছে ব্রাজিলে। দেশটিতে ৪৯ জন পরিবেশবাদীকে হত্যা করা হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলম্বিয়া (৩৭)। এরপর রয়েছে ফিলিপাইন (২৮), ভারত (১৬), হন্ডুরাস (১৪), নিকারাগুয়া (১১), কঙ্গো (১০), বাংলাদেশ (৭), গুয়াতেমালা (৬), ইরান ও মেক্সিকোতে ৩ জন, মিয়ানমার, পেরু ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ২ জন করে পরিবেশবাদীকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া জিম্বাবুয়ে, ক্যামরুন, চীন, আয়ারল্যান্ড, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, তাঞ্জানিয়া, থাইল্যান্ড, উগান্ডা, ভিয়েতনাম ও জিম্বাবুয়েতে একজন করে পরিবেশবাদীকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

বাংলাদেশে নিহত ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। বাংলাদেশে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে নিহতরা হলেন, আনোয়ারুল ইসলাম (আঙ্গুর), মঙ্গল মাদ্রি, মর্তুজা আলী, রমেশ টুডু, শ্যামল হেমব্রম (শ্যামল সরেন), জাগের আহমেদ ও জাকির হোসাইন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিবেশবাদীদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করার প্রবণতা বেড়েছে। এর ব্যাখ্যা হিসেবে বলা হয়েছে, যারাই উন্নয়ন প্রকল্পের বিরোধিতা করছেন তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা দায়ের করে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। প্রতিবাদকারীদের নিশ্চুপ, মানুষকে আতঙ্কিত ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই আদালতের সময় ও সম্পত্তি অপচয় করা হচ্ছে। এ ধরনের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ আমেরিকায়।

গ্লোবাল উইটনেসের ক্যাম্পেইনার বেন লেথার এক বিবৃতিতে বলেন, পৃথিবী রক্ষার আন্দোলন দ্রুত ঘনিভূত হচ্ছে এবং মানুষকে জীবন দিতে হচ্ছে। অনেক দেশেই ভূমি দখল ও পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার কারণে মানুষের সামনে প্রতিবাদ করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। অনেক সময় আন্দোলনকারীদের নৃশংসভাবে হত্যা করে নিশ্চুপ করা হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক ও অভিজাত ব্যবসায়ীদের দ্বারাই এমন হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এসব ঘটনায় বিনিয়োগকারীরা কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। সূত্র: ন্যাশনাল অবজার্ভার।

/এএ/