বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত উগ্রপন্থীকে স্কুলে চাকরি দিতে ব্রিটিশ কোম্পানির অস্বীকৃতি

মেইল অনলাইনে প্রকাশিত ইমরান মিয়া`র ছবিযুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষক সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠান লন্ডনের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক শিক্ষককে চাকরি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ওই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসলামি উগ্রপন্থার পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ রয়েছে।

শিক্ষক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এনলাইটেন সাপ্লাই পুল লিমিটেড বাংলা ট্রিবিউনকে জানায়, ইমরান মিয়া নামের ওই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানটিতে নিবন্ধিত ছিলেন। কিন্তু ‘সৌভাগ্যক্রমে’ যুক্তরাজ্যের কোনও স্কুলে তার চাকরি হয়নি। গত সপ্তাহে ২৭ বছরের এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ছদ্মনামে আইএসের সমর্থনে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশের অভিযোগ ওঠে।

প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র বলেন, ওই ব্যক্তি আমাদের নিবন্ধিত তালিকায় ছিলেন। আমাদের সৌভাগ্যের যে, কোনও স্কুলে চাকরির জন্য তাকে পাঠানো হয়নি।

মুখপাত্র আরও বলেন, কয়েক বছর ধরে শিক্ষকতার যোগ্যতা সম্পন্ন প্রায় ১৫ হাজার ব্যক্তি আমাদের তালিকাভুক্ত আছেন। আমরা উগ্রপন্থাকে সমর্থন করি না এবং এমন ব্যক্তিদের স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছাকাছি ঘেঁষতে দেবো না।

ইমরান মিয়া পূর্ব লন্ডনের মানর পার্ক এলাকার বাসিন্দা। গত কয়েক বছর ধরে সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত কয়েকটি মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। লন্ডনের বসবাসরত ইমরানের মা আনোয়ারা বেগম নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘সে ব্রিটেনের কয়েকটি স্কুলে শিক্ষকতা করেছে। কয়েক মাস আগে ইমরান বাংলাদেশে চলে গেছে।’

মেইল অন সানডে পত্রিকার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ইমরান মিয়ার অনলাইনে উগ্রপন্থী কার্যক্রম সামনে এসেছে। গত বছর ফ্রান্সের নিস শহরে হামলায় নিহত ৮৬ জনের পরিবারের প্রতি কটাক্ষ করে পোস্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্বজনদের আহাজারির একটি খবর শেয়ার করে তিনি  লিখেছেন, ‘আমাদের মৃতরা জান্নাতে যাবে কিন্তু তোমাদের যারা মারা গিয়েছে তারা আগুনে পুড়বে।‘

গত বছর ফেসবুকে একটি পোস্টে ফিলিস্তিনে ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। যাতে তিনি ‘ইহুদিদের শেকল থেকে মুক্তি’র কথা উল্লেখ করেছেন।

ইমরান মিয়া সামাজিক মাধ্যমে ইমরান ইবনে ফারিদ ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন। গত সপ্তাহে সংবাদমাধ্যমগুলোতে তার উগ্রপন্থা নিয়ে আলোচনার  পর এসব সামাজিক মাধ্যমের পেজ মুছে ফেলা হয়েছে।

স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড ইমরানের বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ তদন্ত করছে। স্কুলে শিক্ষকতার অনুমতি কিভাবে পেলেন এবং স্কুল শিক্ষার্থীদের কেমন প্রভাবিত করেছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অনলাইনে সন্দেহজনক সন্ত্রাসী বা উগ্রপন্থী যে কোনও ধরনের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে অবহিত করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সবগুলো তথ্যই খতিয়ে দেখবে ন্যাশনাল কাউন্টার টেরোরিজম ইন্টারনেট রেফারেল ইউনিট।

/এএ/টিএন/