আর্সেনিক প্রতিরোধী ধান উৎপাদনে পরীক্ষা চালাচ্ছে যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যের একদল বিজ্ঞানী পরীক্ষা চালিয়ে দেখছেন, আর্সেনিকে দূষিত মাটিতে ফসল চাষ কতটা সম্ভব। যদি পরীক্ষাটি সফল হয় তাহলে তা বাংলাদেশের কৃষকদের জন্য অনেক বড় সুফল বয়ে আনবে। ‘ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইকের’ ‘স্কুল অব লাইফ সায়েন্সের’ অধীনস্ত ‘ড. অ্যালেক্স জোন্স ল্যাবেরটরির’ গবেষক ড. মোহন টিসি আর্সেনিক প্রতিরোধী ট্রান্সজেনিক বার্লি চাষের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। এখন আর্সেনিক দূষিত মাটিতে আর্সেনিক প্রতিরোধী ধান উৎপাদনের প্রকল্প নিয়েও কাজ চলছে। তার গবেষণায় অর্থায়ন করছে যুক্তরাজ্যের ‘মেডিকেল অ্যান্ড লাইফ সায়েন্স’ (এমএলএসআরএফ)। বিশ্ব মাটি দিবস উপলক্ষে বুধবার (৫ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে একটি ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।s4.reutersmedia.net

ড. মোহন টিসি বলেছেন, ‘ক্যান্সারের কারণ হতে পারে আর্সেনিক। আমাদের আর্সেনিক প্রতিরোধী খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে পারতে হবে। বর্তমানে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে আমরা ধানে থাকা কিটোকিনিন হরমোন পরিবর্তনের চেষ্টা চালাচ্ছি। এভাবে পরিবর্তিত ধানের মূল আর্সেনিক প্রতিরোধে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হবে।’

ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাটিতে থাকা আর্সেনিক পুরো বিশ্বের জন্যই একটি সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। রাসায়নিকটি ক্যানসার তৈরি করে এবং বাংলাদেশ ও ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের মাটিতে ও পানিতে প্রাকৃতিকভাবেই উপস্থিত রয়েছে।

আর্সেনিক প্রকৃতিতে সাধারণত আর্সেনেট আকারে থাকে, যার রাসায়নিক গঠন ফসফেটের মতোই। ফলে গাছ যখন মাটি থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে তখন খুব সহজে আর্সেনিকও গাছে প্রবেশ করে। আশার কথা হচ্ছে, আর্সেনিক দূষণ প্রতিরোধের জন্ত্য গাছের নিজস্ব কিছুটা ক্ষমতাও রয়েছে।

গাছ একটি বিশেষ ধরনের পেপটাইড তৈরি করে আর্সেনিকের প্রবেশ বাধাগ্রস্ত করতে পারে।এর মাধ্যমে গাছের মূলেই আর্সেনিককে সীমাবদ্ধ করে রাখা সম্ভব হয়।

‘ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইকের’ বিজ্ঞানীর চাইছেন গাছের মূলে, সংশ্লিষ্ট পেপটাইডগুলোর উপস্থিতি আরও বাড়াতে, যাতে গাছ আরও বেশি মাত্রায় আর্সেনিক দূষণ প্রতিহত করতে পারে। তা সম্ভব হলে গাছের বা শস্যের ওপরের দিককার যে অংশ খাওয়া হয় সেখানে আর্সেনিকের উপস্থিতি ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির দাবি, এটা সম্ভব হবে মূলে কিটোকিনিন হরমোনের উপস্থিতি কমিয়ে দিয়ে, যা তারা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছেন।