সবজি দেখলেই ঘামেন তিনি!

মারাত্মক খাদ্য ভীতিতে (ফুড ফোবিয়া) ভোগা ইংল্যান্ডের এক নারী জানিয়েছেন, শৈশব থেকে তিনি কখনোই সবজি খাননি। নর্থ ইয়র্কশায়ারের বাসিন্দা ৩৪ বছরের শার্লট হুইটল জানান, ব্রকলির একটা টুকরাই তার হাতের তালু ঘামার জন্য যথেষ্ট। বছরের পর বছর ধরে চিকেন নাগেট আর চালের পিঠা খেয়েই বেঁচে আছেন শার্লট।

শৈশবে শার্লটের বাবা-মা তাকে প্রায়ই বলতেন রাতের খাবার শেষ না করলে ক্ষুধার্ত থাকতে হবে। তবে খেতে ইচ্ছা না করা কোনও কিছু খেলে টেবিলেই বমি করে দিতেন তিনি। আর এভাবেই সস মেশানো খাবার, একসঙ্গে কয়েকটি খাবার মেশানো, পাতলা তরল খাবারের প্রতি ভীতি তৈরি হয় তার।

মা জুডি ভাবতেন সময় গেলেই এই ভয় দূর হয়ে যাবে। সেকারণেই শার্লটকে তিনি ‘নিরাপদ’ খাবার যেমন হটডগ, চিকেন নাগেট কিংবা ফিশ ফিঙ্গার খেতে দিতেন। স্কুলে দুপুরের খাবারের সময় প্লেটের খাবার শেষ করতে বলা হলে কান্নাকাটি শুরু করে দিতেন শার্লট হুইটল।

১৮ বছর বয়সে চাকরি পেয়ে বাড়ি ছাড়েন শার্লটন। তার চাকরিদাতা কর্মীদের জন্য রান্না করতেন। তার খাবার পছন্দ নিয়ে হাসাহাসি করতো সহকর্মীরা। পরে তিনি নিজের খাবার নিজেই তৈরি করে নেওয়ার অনুরোধ করেন।

শার্লট হুইটল বলেন, ‘এমনকি ভুল তাপমাত্রার খাবার কিংবা ভুলভাবে সরবরাহ খাবারেও পেটে সমস্যা হতো। আমি টমেটো স্যুপ খাই, কিন্তু তা কেবল বাটিতে- কোনও মগে নয়।’

সামাজিক জীবনেও প্রভাব ফেলে শার্লটের এই খাবার ভীতি। ডেট করতে গেলে প্রায়ই খাবার খেতে হয় বলে তাও এড়িয়ে চলতে থাকেন তিনি।

সম্প্রতি শার্লট হুইটল একটি টিভি শোতে যোগ দেন। এক্সট্রিম ফুড ফোবিক নামের এই শো উপস্থাপক ড. রাজ সিং তাকে জানান যে তিনি মারাত্মক ভিটামিন সি ঘাটতিতে ভুগতে পারেন। এর কারণে ক্লান্তি, মাড়িতে রক্তক্ষরণ এবং মেজাজ খারাপ হতে পারে। ওই শোতে ক্লিনিক্যাল সাইকোলোজিস্ট ফেলিক্স ইকোনোমেকিস তাকে জানান যে, তার ধারণা শার্লট সম্ভবত অ্যাভয়ডেন্ট রেস্ট্রিক্টিভ ফুড ইনটেক ডিজঅর্ডারে (এআরএফআইডি) ভুগছেন।

ওই শোয়ের পর থেকে শার্লট সস এবং আঙুর দিয়ে পাস্তা খাওয়ার চেষ্টা করছেন। এছাড়া পিজা আর ভুট্টাও খাদ্য তালিকায় যোগ করতে পেরেছেন তিনি।

বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে নতুন একটি খাবার তালিকায় যোগ করার চেষ্টা করছেন শার্লট হুইটল। তিনি বলেন, ‘আমি এখন প্রথম সবজি খাচ্ছি- মিষ্টি আলু। আমার স্বপ্ন হলো বন্ধুদের সঙ্গে খেতে যাওয়া আর খাবার নিয়ে কোনও ভীতি ছাড়াই ডেটে যাওয়া। আশা করি সে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবো।’