লন্ডনে আবাসিক ভবনে বাংলাদেশি শিশুর মৃত্যু, রাসায়নিকের উপস্থিতি

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাঙালিপাড়া টাওয়ার হ্যামলেটসের শেডওয়েল স্টেশন সংলগ্ন একটি আবাসিক ভবনে ১১ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ভবনটিতে বিপুল পরিমাণে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের রাসায়নিক ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। মৃত কিশোরির মা এবং ভাইও সংকটাপন্ন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পরিবারটি ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকে এই ভবনের বাসিন্দাদের আকস্মিক বমি ও ডায়রিয়া দেখা দেয়। তাৎক্ষণিকভাবে তারা অ্যাম্বুলেন্স ডাকেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তরল খাবার বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে চলে যায় অ্যাম্বুলেন্স কর্মীরা। কিন্তু পরে পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। মৃত মেয়ের বাবা বাংলাদেশে ছুটিতে থাকায় তার মা পারিবারিক বন্ধু সানজিদা ইকবালকে ফোন দিয়ে ওষুধ আনতে বলেন। তিনি এসে তাদের অবস্থা বেগতিক দেখে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন। মেয়েসহ মা ও ছেলেকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা মেয়েটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

কিশোরীর নানা সিরাজগঞ্জ বার কাউন্সিলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এস এম কামরুজ্জামান খোকন সাংবাদিক‌দের জানান, আমার নাতনি ১১ ডিসেম্বর ২০১০ সালে জন্মগ্রহণ করেছিল। ঠিক ১১ বছর পর তার জন্মদিনেই সে আমাদেরকে কাঁদিয়ে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলো। কিশোরীর বাবা শহীদুল ইসলাম বাংলাদেশ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। কিশোরীর মা কানিজ ফাতেমা। তাদের উভয়ের বাড়ি বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ।

স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড জানিয়েছে, আরও তিন ব্যক্তি অসুস্থ হওয়ার কথা জানা গেছে। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে এবং শেষ অবস্থা জানা যায়নি।

স্থানীয় লেবার এমপি আপসানা বেগম টুইটারে এই ঘটনা সম্পর্কে লিখেছেন, দুঃখজনক এই ঘটনায় একটি মেয়ের জীবন কেড়ে নিল। ভবনটিতে রাসায়নিক পাওয়া গেছে।

লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড ভবনটিতে অনুসন্ধান চালিয়েছে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রাসায়নি পেয়েছে। লন্ডন মেট্রো পুলিশ বলছে, ধারণা করা হচ্ছে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের জন্য এই রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে।  

এক মুখপাত্র জানান, এসব রাসায়নিক নিরাপদে সরানো হবে এবং এগুলো কীভাবে ভবনে আসলো তা জানতে তদন্ত করা হবে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ভবনটির অপর বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হবে।

গোয়েন্দারা ঘটনাটি তদন্ত করছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এটিকে ফৌজদারি তদন্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে না।