চীন সফরে আসতে চান ট্রাম্প

150825074134-donald-trump-xi-jinping-super-teaseমার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় দুই মাস পার হলেও এখনও কোনও দেশ সফরে যাননি। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণাও আসেনি কোন দেশে সফরে যাওয়ার। আর রবিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন জানিয়েছেন,  ট্রাম্প চীন সফরে যেতে চান। অথচ পুরো নির্বাচনি প্রচারণায় চীনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছিলেন ট্রাম্প।

রেক্স টিলারসন জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনের নেতা শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক ও চীন সফরে আগ্রহী। দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়াকে আরও বিস্তৃত করতেই চীন সফরে আসতে চান ট্রাম্প।

দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো পূর্ব এশিয়া সফরের শেষ দিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। চীনের গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রেক্স টিলারসনকে শি জানান, দুই দেশের উন্নতির কারণে তিনি গর্বিত। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথাও হয়েছে বলে জানান শি।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ওই বৈঠকে দুদেশের বিবাদপূর্ণ ইস্যুগুলো এড়িয়ে যেতে দেখা গেছে। অন্তত সাংবাদিকদের সামনে এ ইস্যুগুলো তোলা হয়নি। বরং শি বলেছেন, দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের নতুন যুগপর্ব যেন মসৃণ হয় তার জন্য টিলারসন বেশ চেষ্টা করেছেন।

শি বলেন, ‘আপনি বলেছেন চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কেবল বন্ধুসুলভ হতে পারে। আমি একে স্বাগত জানাচ্ছি।’  শি জানান, বেশ কয়েকবার টেলিফোন আলাপ ও বার্তার আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা দুজনই বিশ্বাস করি শেষ পর্যন্ত চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এমন দিকে এগিয়ে চলছে যার জন্য আমরা উভয় পক্ষই সংগ্রাম করছি।’ 

টিলারসন জানান, শি-এর সঙ্গে ট্রাম্পের মধ্যে এরইমধ্যে যে যোগাযোগ হয়েছে তাকে খুব গুরুত্ব দিচ্ছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি আরও আলোচনার মধ্য দিয়ে আরও বড় ধরনের বোঝাপড়ায় পৌঁছাতে পারব যা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বন্ধনকে আর শক্তিশালী করবে। সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের আবহ তৈরি করবে।’

এর আগে উত্তর কোরিয়া বিষয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।  দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের পর টিলারসন সাংবাদিকদের জানান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই গত দুই দশক ধরে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র কর্মসূচির হুমকি কমিয়ে আনতে পারছে না। তিনি বলেন, আমাদের একটি সাধারণ উদ্দেশ্য ও সচেতনতা রয়েছে। পেনিনসুলা অঞ্চলে উত্তেজনা চরম অবস্থায় আছে এবং তা বিপজ্জনক উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে। যেকোনও সংঘাত এড়াতে আমরা (চীন-যুক্তরাষ্ট্র) সবকিছু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছি।’

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও আলোচনাকে স্পষ্ট,বাস্তবধর্মী ও সফল বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন,যাই ঘটুক না কেন,শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য কূটনৈতিক উপায়ে কাজ করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

অনেক ইস্যুতে বিরোধ থাকার পরও টিলাসনের চীন সফরের মধ্য দিয়ে কিছু অগ্রগতি দেখা গেছে। জটিল ইস্যুগুলোকে এক পাশে সরিয়ে রাখতে রাজি রয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। অন্তত শি জিনপিং ও ট্রাম্পের মধ্যে পরিকল্পিত বৈঠকের আগ পর্যন্ত হলেও তা বজায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।  সূত্র: বিবিসি।

/এএ/