মস্কো সফরে যাবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন?

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনসিরিয়ার বিমান ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর রুশ-মার্কিন সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের আসন্ন মস্কো সফর নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

মঙ্গলবার ইদলিবে একটি বিমান হামলায় সিরিয়ার বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই মূলত দুই দেশের সম্পর্কে নতুন বিরোধ দেখা দেয়। আর শুক্রবার মার্কিন হামলার পর সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত উত্তেজনাকর অবস্থায় পৌঁছেছে।

আগামী সপ্তাহেই রাশিয়া ভ্রমণের সফর সূচি নির্ধারিত ছিল। নতুন পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে টিলারসন রাশিয়া সফরে যাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

রুশ সংসদের নিম্নকক্ষের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির প্রধান মনে করেন, এরপরও মস্কো সফরে যাবেন টিলারসন। তিনি বলেন, আমি মনে করি না এ হামলার ঘটনায় টিলারসনের রাশিয়া সফরকে প্রভাবিত করবে। আমাদের (রাশিয়া) উচিত তাকে স্বাগত জানানো। আমাদের আলোচনা শুরু করা দরকার।

এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা হোয়াইট হাউসের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে হামলার পর বিভিন্ন মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে আগে থেকেই রাশিয়াকে অবহিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। হামলায় কোনও রুশ সেনা ও নাগরিকের মৃত্যুর খবরও পাওয়া যায়নি।

সাংবাদিকদের টিলারসন দাবি করেছেন, সিরীয় সরকারের রাসায়নিক হামলার মতো কাজে সহযোগিতা করে রাশিয়া অন্যায় করেছে অথবা সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে রাশিয়া।

টিলারসন জানান, যে কোনও নির্মম পদক্ষেপের জবাব কেমন হবে তা সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দেখিয়েছেন ট্রাম্প।

শুক্রবার সিরিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের বিবৃতিতে বলা হয়, ভূমধ্যসাগরে অবস্থান করা যুক্তরাষ্ট্রের দুটি যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস পোর্টার এবং ইউএসএস রস থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ নিয়ন্ত্রিত ওই বিমানঘাঁটিতে ৫৯টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। হামলায় ঘাঁটিতে রাখা যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারসহ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।

ওই হামলায় অন্তত চারজন সিরীয় সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বহু সেনা সদস্য। ওই ঘাঁটিতে থেকে সুখোই ২২, সুখোই ২৪ এবং মিগ ২৩ বিমান ছিল। নিহতদের মধ্যে একজন জেনারেল পদমর্যাদার সামরিক কর্মকর্তাও ছিলেন বলে জানায় সিরিয়ান অবজারভেটরি।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, সিরিয়া মঙ্গলবার নিষিদ্ধ রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার ফলেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি অস্বীকার করেছে সিরিয়া সরকার। রাশিয়া দাবি করেছে, বিদ্রোহীরা রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ গড়ে তুলেছিল। বিমান হামলায় তা বিস্ফোরিত হয়েছে, আসাদ সরকার রাসায়নিক হামলা চালায়নি। মঙ্গলবারের ওই হামলায় অন্তত ৮৬ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। সূত্র: বিবিসি।

/এএ/