ট্রাম্পের রুশ সংযোগের অভিযোগ নিয়ে নীরব থাকবে হোয়াইট হাউস

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব শ্যেন স্পাইসারট্রাম্পের বিরুদ্ধে রুশ সংযোগের অভিযোগ প্রশ্নে নীরব ভূমিকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউস। তারা জানিয়েছে, ট্রাম্প-রাশিয়া সম্পর্ক নিয়ে চলমান তদন্তের বিষয়ে আর কোনও প্রশ্নের জবাব দেওয়া হবে না। বুধবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব শ্যেন স্পেইসার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন।  ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক খবর থেকে এ কথা জানা গেছে।

ট্রাম্পের রুশ সংযোগ তদন্ত নিয়ে কোনও প্রশ্নের জবাব না দেওয়ার নতুন নীতিটি এমন সময় নেওয়া হয়েছে যখন হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটি এ বিষয়ে একটি সমন জারি করেছেন। মাইকেল ফ্লিন ও ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন ও তাদের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে এ সমন জারি করা হয়।

মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের রুশ সংযোগের তদন্ত করছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। কিছুদিন আগেই এফবিআই’র প্রধান জেমস কোমিকে বরখাস্ত করে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেন ট্রাম্প। এর আগে রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ ওঠার পর পদত্যাগে বাধ্য করা হয়  ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনকে। কোমিকে অপসারণের পর অভিযোগ ওঠে, রুশ সংযোগের তদন্ত থেকে রক্ষা পেতেই ওমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। । কোমি দাবি করেছেন, ফ্লিনের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করতে তাকে বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আগামী সপ্তাহে জেমস কোমি কংগ্রেসনাল কমিটির প্রকাশ্য শুনানিতে সাক্ষ্য দিতে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা জেমস কোমির কাছে থাকা প্রমাণ ও বিচার প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাধা সৃষ্টি করছেন কিনা জানতে চান। জবাবে শ্যেন স্পাইসার বলেন, ‘আমরা প্রেসিডেন্টের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মনোযোগ দিচ্ছি। এখন থেকে এ বিষয়ক (রুশ সংযোগ তদন্ত) সব প্রশ্নের হোয়াইট হাউসের বাইরে আইনজীবী মার্ক কাসোউইচ দেবেন।’ কাসোউইচ দীর্ঘদিন ধরে ট্রাম্পের আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন। ট্রাম্পের হয়ে আবাসন, বিবাহবিচ্ছেদ ও ট্রাম্প ইউনিভার্সিটির জালিয়াতি মামলা লড়েছেন তিনি।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ফ্লিনের রাশিয়া সংযোগ নিয়ে তদন্ত বন্ধ করতে ট্রাম্পের চাপ দেওয়ার কথা জানাবেন সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটিতে বরখাস্ত হওয়া এফবিআই প্রধান কোমি। এ বিষয়ে তদন্তের নেতৃত্ব দেওয়া স্পেশাল প্রসিকিউটর রবার্ট মুয়েলারের সঙ্গেও কথা বলেছেন এফবিআই-এর অপসারিত শীর্ষ ব্যক্তি। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই হোয়াইট হাউসের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ও ট্রাম্পের রুশ সংযোগ প্রাধান্য পেয়ে আসছে। এমনকি ট্রাম্পের হতাশাজনক টুইটগুলোও বিষয়টি বারবার সামনে নিয়ে এসেছে। বুধবার এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিষয়টি পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত চলছে। ফলে আইনি বিষয়ে মন্তব্য করাকে হয়ত নিরাপদ ভাবছেন না।

হোয়াইট হাউসের যোগাযোগ পরিচালক মাইকেল ডাবকে চলতি সপ্তাহেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। আরও বেশ কিছু রদবদল হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। এমনকি প্রেস সচিব স্পাইসারের ভবিষ্যৎও খানিকটা অনিশ্চিত। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

/এএ/বিএ/