ট্রাম্প নিয়ে হতাশা, পদত্যাগ করলেন এস্তোনিয়ার মার্কিন দূত

ইউরোপীয় মিত্রদের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য ও আচরণে হতাশ হয়ে পদত্যাগ করেছেন এস্তোনিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস ডি. মেলভিল জুনিয়র। ফরেন পলিসি সাময়িকির বরাত দিয়ে এখবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। মেলভিলের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে এবছর তৃতীয় রাষ্ট্রদূত মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করলেন।

এস্তোনিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন দূত

এক বিবৃতিতে বলা হয়, শুক্রবার সকালে এস্তোনিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জিম মেললিব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ২৯ জুলাই থেকে এই পদত্যাগ কার্যকর হবে। ৩৩ বছর সরকারের সেবায় নিযুক্ত থাকার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

মেলভিলের পদত্যাগ এমন সময় আসলো যখন ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের উত্তেজনা বিরাজ করছে। ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার আগে ইউরোপীয়দের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় ও শক্তিশালী সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ন্যাটো সদস্যদের প্রতি ট্রাম্পের আক্রমণ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দেশগুলো ওপর শুল্কারোপ, ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসা, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে প্রত্যাহার ও জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেলের মতো নেতাদের সমালোচনা করায় ইউরোপের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ক জটিলতায় পড়েছে।

২০১৮ সালের জুনের গোড়ার দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে ইস্পাত আমদানিতে ২৫ শতাংশ এবং অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। দেশীয় শিল্প রক্ষার কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের ওপর এই শুল্ক আরোপ করা হয়। প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ও গত সপ্তাহে বিভিন্ন মার্কিন সামগ্রীর ওপর আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। এসব সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে হারলি মোটরসাইকেলের নামও রয়েছে। এরপরই নিজেদের কিছু কারখানা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় হারলি-ডেভিডসন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এরইমধ্যে কানাডা এবং মেক্সিকোর পক্ষ থেকেও বিভিন্ন মার্কিন সামগ্রীর ওপর আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে গাড়ি আমদানির ওপর ২০ শতাংশ হারে কর আরোপের মাধ্যমে ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ আরও জোরালো করার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। ইউরোপ থেকে গাড়ি আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার কোনও হুমকি আছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য প্রায় এক মাস আগে তদন্তও শুরু করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এরই মধ্যে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে মার্কিন পণ্যে নতুন কর কার্যকর ঘোষণা করার পর ট্রাম্প এমন হুমকি দিলেন ট্রাম্প। 

অনেক ইউরোপীয় কর্মকর্তা জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে বেলজিয়ামে ন্যাটো সম্মেলনে ট্রাম্পের উপস্থিতি নিয়ে সতর্ক অবস্থান নিচ্ছেন। ওই কর্মকর্তাদের আশঙ্কা ন্যাটো সম্মেলনের পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক মনে হবে বন্ধুত্বপূর্ণ।