‘স্পেস আর্মি’ গঠনের পরিকল্পনা উন্মুক্ত করলো যুক্তরাষ্ট্র

রাশিয়া ও চীনের কাছ থেকে হুমকি বাড়তে থাকায় আগামী চার বছরের মধ্যে মহাকাশ বাহিনী (স্পেস আর্মি) গঠনের পরিকল্পনা উন্মুক্ত করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ সমন্বিত যুদ্ধ কমান্ডের অধীনে মার্কিন মহাকাশ কমান্ড গঠন করা হবে। ২০২০ সালে ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনের অর্থ সংগ্রহের জন্য সমর্থকদের কাছে এক ইমেইলে এই বাহিনীর জন্য লোগো পছন্দ করতে মতামত চাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাঠানো এই ইমেইলে ছয়টি লোগো দিয়ে একটি বাছাই করতে বলা হয়েছে। এই লোগোটিই ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণার লোগো হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

screen-shot-2017-04-05-at-101651png

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স মনে করেন, মহাকাশ বাহিনী গঠনের ‘সময় চলে এসেছে’। তিনি বলেন, পূর্বের প্রশাসনগুলো সব কাজই করেছে কিন্তু মহাকাশে নিরাপত্তা হুমকির বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। আমাদের প্রতিযোগিতা মহাকাশকে এরইমধ্যে যুদ্ধের ময়দানে পরিণত করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র সে চ্যালেঞ্জ থেকে সরে আসবে না।’

মহাকাশ বাহিনীকে সামরিক সক্ষমতায় সাজানো হবে। এতে থাকবে স্যাটেলাইট সক্রিয় গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) ও মিসাইল শনাক্তে সহায়তা করতে সক্ষম সেন্সর। আগে বিরোধিতা করলেও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস এখন মনে করেন এটি একটি ভালো পরিকল্পনা। ম্যাটিস বলেন, ‘এটা (মহাকাশ) একটা যুদ্ধের ময়দানে পরিণত হচ্ছে আর আমাদের ওই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে।’

তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর ব্রাইয়ান স্ক্যাটজের মতো সমালোচকরা একে ‘নির্বোধ চিন্তা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আরেক সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এক টুইটার পোস্টে  বলছেন, বাইরের মহাকাশে হাজার হাজার কোটি ডলার খরচে সামরিকায়ন করার আগে ট্রাম্পের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা উচিত।

অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন মহাকাশচারী মার্ক কেলি মনে করেন, বর্তমানে বিমানবাহিনী যে কাজগুলো করছে, মহাকাশ বাহিনীর কাজ তার থেকে আলাদা কিছু হবে না। মহাকাশে হুমকি প্রশ্নে মার্ক কেলি বলেন, ‘সেখানে হুমকি আছে ঠিকই, কিন্তু সেগুলো এখন মার্কিন বিমান বাহিনীই সামলাচ্ছে। আরও একটি আমলাতন্ত্র তৈরির কোনও মানে নেই।’

এই পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে হলে মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়ার দরকার পড়বে। সেখানে এর উদ্দেশ্য ও ব্যবহার নিয়ে এটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করা হবে।

মহাকাশে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র মোতায়েনবিরোধী সংক্রান্ত ১৯৬৭ সালে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ওই চুক্তি অনুযায়ী শুধু শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই মহাকাশে কার্যক্রম চালানো যায়।

আটলান্টিক সাগর পাড়ের দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিটিশ প্রতিদ্বন্দ্বিরা জেফ্রিরস ড্রোন নামে একটি বিমানের উন্নয়ন ঘটিয়েছে। ওই ড্রোনটি মহাকাশে বাতাস প্রবাহিত করতে পারে। জেফ্রিরস ড্রোনটি বিশ্বের যেকোনও স্থান থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় আর তা ৭০ হাজার ফুট উচ্চতা দিয়ে উড়তে পারে।