শেষ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি পেলেন বাংলাদেশি সালমা

ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া এক বাংলাদেশি মা বিতাড়িত হওয়ার একেবারে শেষ মুহূর্তে দেশটিতে থাকার অনুমতি পেয়েছেন। জরুরি ভিত্তিতে থাকার আপিল আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায় যখন সালমা সিকান্দার ও কানেক্টিকাটে বসবাসরত তার পরিবার ভাবছিলেন সব আশা বুঝি শেষ হয়ে গেলো তখনই কর্তৃপক্ষ তাদের থাকার অনুমতি দিলো।

পরিবারের সঙ্গে সালমা

আপিল আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি পাওয়ার ঘটনা খুব বিরল। বাংলাদেশি সালমা সিকান্দার সেই বিরল সুযোগ পেয়েছেন। বুধবার তাদের আইনজীবী ফোন করে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্মকর্তারা তাকে আপাতত বসবাসের অনুমতি দিয়েছেন।

সালমার স্বামী আনওয়ার মাহমুদ গত দুই দিন ধরে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। সালমাকে বসবাসের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে প্রায় শখানেক মানুষ আদালত প্রাঙ্গনের বাইরে জড়ো হন। তারা স্লোগান দেন কিপ সালমা হোম (সালমাকে থাকতে দাও) এবং জাস্টিস ফর সালমা (সালমার জন্য ন্যায় বিচার চাই)।

থাকার অনুমতির প্রতিক্রিয়ায় আনওয়ার বলেন, এমনটা সাধারণত ঘটে না। যখন খবরটি শুনি আমি শিশুর মতো কান্নায় ভেঙে পড়ি।

সালমার পরিবার স্থানীয় ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসের নারীর সদস্য রোসা ডিলাউরোর সমর্থনও পেয়েছেন। থাকার অনুমতি পাওয়ার তিনি টুইটারে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।

কয়েক বছর আগে সালমা সিকান্দার যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং নিউ ইয়র্কে স্বামীর পরিচয় ঘটে। তাদের একটি ছেলে রয়েছে এবং নিউ হ্যাভেন এলাকায় বাস করছেন।

আইসিই কর্মকর্তারা জানান, সালমার পর্যটক ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তিনি মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসা নিয়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন। এ জন্য তাকে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। সালমার স্বামী জানান, তিনি সন্তানের দেখাশোনার জন্য সালমাকে বসবাসের অনুমতি দেওয়ার আবেদন করেছেন। কিন্তু তা নাকচ করা হয়। পরবর্তী আবেদনগুলোও নাকচ করে দেওয়া হয়। আনওয়ার মাহমুদ নিজেরও বৈধ কাগজপত্র নেই এবং তার রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদনের শুনানি চলছে।

আপাতত পরিবারটি কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। তাদের ছেলে সামির মাহমুদ কুইনিপিয়াক ইউনিভার্সিটিতে আগস্টে পড়াশোনা শুরু করছে। পরিবারটির জন্য এটা ভালো একটা সময়।

ম্যাকডোনাল্ডসে ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আনওয়ার মাহমুদ বলেন, আমাদের পরিবারের এই প্রথম কেউ কলেজে পড়ার সুযোগ পেলো। আমি ও আমার স্ত্রী এটাই চেয়েছিলাম। সবচেয়ে বড় কথা আমরা পরিবার হিসেবে একসঙ্গে আছি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির অভিবাসন ব্যবস্থাকে সংস্কারের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধে জড়িত অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু গত কয়েক মাসে কোনও অপরাধে যুক্ত না থাকা কাগজপত্রহীন অনেক অভিবাসীকেও বিতাড়নের ঘটনা ঘটেছে।