‘সৌদি ভাষ্যে যে কারও হাসি পাবে’

অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খোশেগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সৌদি আরবের সরবরাহকৃত ভাষ্যকে ‘বোকামো’ আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক কর্মকর্তা গ্লেন কার্ল। তিনি আল জাজিরাকে  বলেছেন, ঘটনা ধামাচাপা দিতে সৌদি আরব যে গল্প বানিয়েছে, তা শুনলে  যে কারও হাসি পাবে।6993789

গত ২ অক্টোবর খাশোগি নিখোঁজের পর থেকেই সৌদি আরব দাবি করে আসছিলো, তিনি ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেট থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। শনিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রথমবারের মতো দেশটি স্বীকার করে, খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে।

বিবৃতিতে সৌদি পাবলিক প্রসিকিউটর দাবি করেন, স্বেচ্ছায় নির্বাসনে থাকা খাশোগিকে সৌদি আরবে ফিরিয়ে আনার জন্য সাধারণ নির্দেশনা জারি ছিল। যখন খবর আসে ২ অক্টোবর খাশোগি ইস্তানবুল কনস্যুলেটে যাবেন বিয়ের জন্য কিছু নথিপত্র নিতে তখন জেনারেল আসিরি ১৫ সদস্যের একটি দল পাঠান এ ব্যাপারে তার সঙ্গে আলোচনা করতে। সৌদি কনস্যুলেটে দেখা করতে যাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে খাশোগির লড়াই হয়। আর তাতেই খাশোগির মৃত্যু হয়। সিআইএর সাবেক কর্মকর্তা গ্লেন কার্ল একে বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন না।

গ্লেন কার্ল বলছেন, দূতাবাসে হাতাহাতির ঘটনায় জামাল খাশোগির মৃত্যু হওয়ার যে গল্প সর্বশেষ তারা বলেছে তাতে অনেকেরই ভ্রুকুঞ্চিত হয়েছে। এ ধরনের ব্যাখ্যাকে নির্বুদ্ধিতা আখ্যা দেন তিনি।  কার্লের ভাষ্য, ‘৫৯/৬০ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি দূতাবাসে ঢুকবেন। আর সেখানে ১৫ জন গুণ্ডার সঙ্গে মারামারিতে লিপ্ত হবেন, এটা আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। এই গল্প নির্বুদ্ধিতাপূর্ণ।’

খাশোগি হত্যাকে ভয়ঙ্কর ঘটনা আখ্যা দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘এটি আমাদের নজরের বাইরে ছিল না।’ কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে খাশোগির হত্যাকাণ্ডকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বললেও এ নিয়ে সৌদি আবরের পক্ষ থেকে হাজির করা ভাষ্যকে বিশ্বাসযোগ্য ও প্রথম ইতিবাচক পদক্ষেপ আখ্যা দেন তিনি। সাংবাদিকদের বলেন,  ‘আমি মনে করি এটা একটা ভাল প্রথম পদক্ষেপ। এটা একটা বড় পদক্ষেপ। এর সঙ্গে অনেক অনেক মানুষ জড়িত আর আমার মনে হয়, এটা বিরাট পদক্ষেপ।’  তবে সৌদি আরবকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্র আখ্যা দিয়ে, এ ঘটনায় সৌদি আরবের সঙ্গে প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আপরোপের সম্ভাবনা নাকচ করেছেন তিনি। 

কার্ল মনে করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে ঘটনার সৌদি ভাষ্য তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য এবং দূতাবাসে যা ঘটেছে তা ‘আহাম্মকি ও আক্রমণাত্মক’ হলেও ‘সৌদিদের দ্বারা ঘটানো সম্ভব।’ কার্লের পর্যবেক্ষণ, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য সৌদিরা যা বলছে ট্রাম্প তার সবই মেনে নিচ্ছেন।’