যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতিকে পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটি’ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কার্যত বিশ্বকে পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। চুক্তিটি টিকিয়ে রাখার পক্ষে রাশিয়ার আনা প্রস্তাব জাতিসংঘের ভোটাভুটি হেরে গেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় শনিবার (২২ ডিসেম্বর) রাশিয়া আবারও একই সতর্ক জানিয়ে বলেছে,পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি যদি শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায় তাহলে যেমন শুরু হতে পারে সামরিক শক্তি প্রদর্শনের পাল্টাপাল্টি চেষ্টা, তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন অংশে দেখা দিতে পারে সরাসরি সংঘর্ষ।2

সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্ভাচেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের মধ্যে ১৯৮৬ সালে ‘ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস’ (আইএনএফ) নামের ওই চুক্তিটি সম্পন্ন হয়েছিল। চুক্তির আওতায় ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য মধ্যম পাল্লার পারমাণবিক বোমাবাহী ও প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন নিষিদ্ধ করা হয়। ২০২১ সালে বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ ফুরাচ্ছে। ট্রাম্প গত অক্টোবর মাসে বলে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিটি নবায়ন করবে না। তাদের অভিযোগ, রাশিয়াই বারবার চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে।

চুক্তির সুরক্ষায় জাতিসংঘে খসড়া প্রস্তাব জমা দিয়েছিল রাশিয়া। জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী মিশনের মুখপাত্র ফয়োদর স্ট্রঝিঝোভস্কি বলেছিলেন, ‘একতরফাভাবে চুক্তি বাতিল করার যে সিদ্ধান্ত আমেরিকা নিয়েছে তাতে এর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে চুক্তি রক্ষার লক্ষ্য নিয়ে রাশিয়া ফেডারেশন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গত ১৪ ডিসেম্বর একটি খসড়া প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চুক্তির কাঠামোর ভেতরে থেকে সব পক্ষকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

জাতিসংঘে রাশিয়ার প্রস্তাব ছিল, ১৯৮৭ সালে স্বাক্ষরিত ‘ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটির’ সমর্থনে যেন আন্তর্জাতিক পক্ষ তাদের অবস্থান ঘোষণা করে। রাশিয়ার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ৪৬টি, আর বিরুদ্ধে ৪৩টি। ভোটদানে বিরত ছিল ৭৮টি দেশ।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটির পক্ষে সমর্থন নিশ্চিতে ব্যর্থ হওয়ার পর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে যে কাঠামো কার্যকর রয়েছে তার বিরুদ্ধে এই ঘটনা এক নতুন আঘাত। আইএনএফ বাতিল হয়ে গেলে বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হবে। তাদের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে পারে।’ গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনও যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেছিলেন। তিনি মনে করেন, এই চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কার্যত পারমাণবিক যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করছে।