বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকের আগে নমনীয় এরদোয়ান

ট্রাম্পের চলে যাওয়া এবং তুরস্কের অর্থনীতি সংকটে থাকা দেশটির দৃঢ় প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান এখন চেষ্টা করছেন পশ্চিমা নেতাদের বৈরী করার বদলে শান্ত করতে। প্রশ্ন হচ্ছে তিনি কতদূর আগাতে পারবেন?

গত চার বছর ধরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান দেশে বিরোধীদের কঠোর হাতে দমন করেছেন এবং রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। মিত্র সরকারগুলোর সঙ্গে একের পর এক চুক্তি করেছেন এবং আঞ্চলিকভাবে যেখানে উপযুক্ত মনে করেছেন সেখানেই সেনা পাঠিয়েছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসন চোখ বন্ধ করে রেখেছিল।

কিন্তু এরদোয়ান যখন সোমবার ব্রাসেলসে ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে হাজির হচ্ছেন, তিনি মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন নিশ্চিতভাবেই আরও সন্দিহান বাইডেন প্রশাসনের। এরদোয়ানের জন্য পরিস্থিতি খুব সরল হয়। করোনাভাইরাস মহামারি ও তার সরকারের অর্থনৈতিক পরিচালনায় অব্যবস্থাপনার কারণে দেশটি মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব ও বিপজ্জনক মাত্রায় দুর্বল লিরার কারণে ঋণ সংকটে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।

তাই নিজের অবস্থান কিছুটা বদলে নিয়েছেন এরদোয়ান। পশ্চিমাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ পাওয়ার প্রত্যাশায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে সুর নরম করেছেন। পশ্চিমা নেতাদের পুনরায় আশ্বস্ত করতে তিনি পূর্ব ভূমধ্যসাগরে গ্যাসের অনুসন্ধান বন্ধ করেছেন। গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগটি ন্যাটো মিত্রদের ক্ষুব্ধ করেছিল। মস্কোর বিরূপভাজন হতে শুরু করেছেন ইউক্রেনকে সমর্থন ও পোল্যান্ডের কাছে তুর্কি নির্মিত ড্রোন বিক্রি করে।

এরপরও এরদোয়ানের হাতে কয়েকটি তুরুপের তাস রয়েছে। ন্যাটোতে তুরস্কের অবস্থানের কারণে লাখো শরণার্থীর আশ্রয় ও আফগানিস্তানে সামরিক অবস্থানের কারণে পশ্চিমাদের সঙ্গে দরকষাকষিতে দেশটিকে বিশেষ সুবিধায় রেখেছে।

তবে এরদোয়ান কর্তৃত্ববাদের ঝোঁক, পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করা এবং রুশ এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনা থেকে বিরত থাকবেন না। বাইডেনের লক্ষ্য মিত্রদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলেও এই অবস্থান থেকে সরবেন না তিনি।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের তুরস্ক প্রকল্পের পরিচালক নিগার গকসেল বলেন, এরদোয়ানকে বাঁকা করার চেষ্টার সময় তুরস্ককে না হারানোর কোনও উপায় নেই। এরদোয়ান এগিয়ে যাওয়ার একটি উপায় খুঁজছেন, যখন তারা নিশ্চিত করতে চাইছে তিনি যেনও রাজনৈতিক সাফল্য না পান।

ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসি’র তুরস্ক গবেষণা কর্মসূচির পরিচালক সোনার কাগাপ্তে বলেন, বাইডেন জানেন তাকে হয়তো তুরস্ক ও গণতন্ত্রের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হবে। সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস