বছরে ৩ ইঞ্চি করে হেলে পড়ছে ভবনটি

যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর ৫৮ তলা বিশিষ্ট অভিজাত মিলেনিয়াম টাওয়ার এখনও বছরে তিন ইঞ্চি করে হেলে পড়ছে। একইসঙ্গে কিছুটা দেবে যাচ্ছে ভবনটি। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিলাসবহুল এই কন্ডোমিনিয়ামটি দেবে যাওয়ার বিষয়টি বুঝে উঠার আগেই সেখানে মাল্টি মিলিয়ন ডলারের অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছিলেন বহু তারকা ক্রীড়াবিদ এবং গুগলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা।

ইঞ্জিনিয়ার রন হ্যামবার্গার বলেন, বর্তমানে ভবনটি যেভাবে হেলে পড়ছে সেটি যদি আগামী কয়েক বছরও অব্যাহত থাকে, তাহলে এক পর্যায়ে হয়তো এর লিফট ও প্লাম্বিং আর কাজ করবে না।

২০০৯ সালে ব্যাপক ধুমধাম করে চালু হয় মিলেনিয়াম টাওয়ার। কম সময়ের মধ্যেই এর চার শতাধিক অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি হয়ে যায়। জানা গেছে, মোট ৭৫০ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে এসব অ্যাপার্টমেন্ট। কিন্তু ২০১৬ সাল নাগাদ সেখনাকার নরম মাটিতে ভবনটি ১৬ ইঞ্চি দেবে যায়।

বিলাসবহুল ভবনটি দেবে যাওয়া এবং কাত হয়ে যাওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ও ডিজাইনারদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ নেয় সেখানকার বাসিন্দারা।

বাসিন্দারা জানান, অ্যাপার্টমেন্টগুলো একবার ৫ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলারের মতো উচ্চ দামে মূল্যায়ন করা হয়েছিল। তবে এখন এর দাম নেই বললেই চলে। ২০২০ সালে একটি গোপন সমঝোতায় ভবনটি ঠিক করার জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলারের স্কিম এবং ভবনের ফ্ল্যাট মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু মেরামত প্রক্রিয়ার মধ্যেও ভবনটির দেবে যাওয়া এবং এবং হেলে পড়া অব্যাহত রয়েছে।

গত গ্রীষ্মে মিলেনিয়াম টাওয়ারের ভিত্তি মজবুত করার কাজ বন্ধ হয়ে যায়, যখন প্রকৌশলীরা আবিষ্কার করেন যে, মেরামতের প্রচেষ্টা শুরু হওয়ার পর থেকে কয়েক মাসে ভবনটি আরও দেবে গেছে। এক ইঞ্চি হেলে পড়ার পাশাপাশি দেবে গেছে পাঁচ ইঞ্চি। গত গ্রীষ্মে এনবিসি বে এরিয়া কর্তৃপক্ষ ভবনটি ২২ ইঞ্চি হেলে পড়ার কথা জানায়। বর্তমানে এটি মোট ২৬ ইঞ্চি হেলেছে।

হ্যামবার্গার গত সপ্তাহে এক আপডেট শুনানিতে সান ফ্রান্সিসকো বোর্ড অব সুপারভাইজারকে জানান, বিল্ডিংটি সুরক্ষিত রয়েছে। হেলা পড়া ঠেকাতে কিছু পরামর্শের কথাও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, বিলাসবহুল ভবনটিতে ওয়াইনের গুদাম থেকে শুরু করে ফিল্ম স্ক্রিনিং রুমও রয়েছে। এছাড়া সেখানে একটি বাটন রয়েছে যেটির মাধ্যমে ১৫ মিনিটের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং সংক্রান্ত সহায়তা পাবেন বাসিন্দারা।