তারুণ্য ফিরে পেতে বছরে ২১ কোটি টাকা ব্যয়সহ যা যা করছেন তিনি

বয়স কমানো নিয়ে বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনার কথা মানব মনে আসে সচরাচর। একটু প্রবীণ অথবা মধ্যবয়সী মানুষের মুখে প্রায়ই শুনতে পাওয়া যায় তাদের তরুণ বয়সের গল্প। আগে কেমন ছিলেন দেখতে আর বয়স বেড়ে যাওয়ায় কেমন বুড়িয়ে গেছেন, এসব নিয়ে অনেকের আক্ষেপেরও শেষ থাকে না। বয়সকে থামিয়ে দেওয়া যেন যেন মানুষের আজন্ম স্বপ্ন ।

কারও যদি বয়স ৩৫ বছরের কম হয় তাহলে তার জানার কথা যে, ৪৫ বছর বয়স খুব বেশি কিছু না। বিশেষ করে আধুনিক মান বিবেচনায়। কিন্তু ইবে’র কাছে ব্রেইনট্রি পেমেন্ট সল্যুশন ৮০ কোটি ডলারে বিক্রি করা মার্কিন টেক উদ্যোক্তা ব্রায়ান জনসন এটি মানতে নারাজ।  

তাই শুধু কল্পনা নয়, ৪৫ বছরের শরীরে ১৮ বছরের তারুণ্য ফিরিয়ে আনার স্বপ্নকে সত্যি করার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন ব্রায়ান জনসন। তারুণ্যের চাকা উল্টো দিকে ঘুরানোর এই প্রকল্পে বছরে তার ব্যয় হচ্ছে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ২১ কোটিরও কিছু বেশি।

তারুণ্য ফিরে পেতে বেশ কয়েক বছর আগে কাজ শুরু করেন তিনি। মানব প্রতিভা ও অত্যাধুনিক সরঞ্জামের পেছনে ব্যয় করেছেন কয়েক কোটি টাকা।

এই উদ্যোক্তা প্রতিনিয়ত তার শারীরিক ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ ও তারুণ্য ফিরে পাওয়ার এই প্রকল্পের নাম দিয়েছেন ‘প্রজেক্ট ব্লুপ্রিন্ট’। এই প্রকল্পে ৩০ জন চিকিৎসকের একটি দল গঠন করা হয়েছে। শরীরের বুড়িয়ে যাওয়ার চাকা উল্টো দিকে ঘুরানোর এই প্রক্রিয়ায় ব্রায়ান এবং তার চিকিৎসক প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সম্পূরক খাবার গ্রহণের পাশাপাশি ব্রায়ানকে মানতে হচ্ছে কঠোর নিয়ম। প্রতিদিন একই সময় ঘুমানো, একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠা, নিয়মিত কঠোর ব্যায়াম ও তালিকা অনুসারে খাবার গ্রহণ-এসব নিয়মের মধ্যে অন্যতম।

একই সঙ্গে তাকে একাধিক তীব্র, অনেক সময় ব্যথাদায়ক চিকিৎসা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে নিজের অগ্রগতি যাচাইয়ের জন্য। রয়েছে অত্যাধুনিক রক্ত পরীক্ষা, এমআরআই, আল্ট্রাসাউন্ড, এমনকি কলোনস্কোপি করতে হচ্ছে প্রতি মাসে।

চামড়ায় সূর্যের আলোর যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে প্রতিদিন সাতটি ক্রিম মাখছেন ব্রায়ান। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে এসিড বড়ি ও লেজার থেরাপির মধ্য দিয়েও যেতে হচ্ছে তাকে।

৪৫ বছর বয়সী মার্কিন এই ব্যবসায়ীর দাবি, বয়স এখন ৪৫ হলেও এই প্রকল্পের মাধ্যমে নিজের শরীরকে ৩৫ বছর বয়সী শরীরে ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন। তার চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো মস্তিষ্ক, যকৃত, কিডনি, দাঁত, চামড়া, চুলসহ দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর কার্যক্ষমতা ১৮ বছরের বয়সের শরীরের মতো অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।

ব্রায়ান বলেছেন, এখন তার হৃৎপিণ্ড ৩৭ বছরের মানুষের মতো, চামড়া ২৮ বছরের যুবকের মতো এবং ফুসফুস ও শরীরের ফিটনেস ১৮ বছরের তরুণের মতো। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেই বছরে এই মোটা অংকের অর্থ খরচ করছেন তিনি। নিজের শরীরকে ১৮ বছরের তরুণের দেহে পরিণত করার লক্ষ্য তার। 

স্বাস্থ্যঝুকি সম্পন্ন বিভ্রান্তিকর এই পদ্ধতি অনুসরণ করায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে ব্রায়ান ও তার চিকিৎসক দল মনে করেন, মার্কিন উদ্যোক্তা নিজের শরীরকে বিজ্ঞানের হাতে সম্পূর্ণ ছেড়ে দিয়েছেন। এই প্রকল্পে সফলতা অর্জিত হলেও তা হবে মানবজাতির জন্য কল্যাণকর।

সূত্র: ওডিটি সেন্ট্রাল