যুক্তরাষ্ট্রে রানি এলিজাবেথকে হত্যার যে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল

হত্যার ষড়যন্ত্র,  তাও আবার প্রয়াত ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন, ১৯৮৩ সালে রানি যখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন, তখন তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। সোমবার (২২ মে) মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) প্রকাশিত নথিতে বিষয়টি উঠে এসেছে।

প্রকাশিত নথি অনুসারে, রানিকে হত্যার হুমকিতে কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এফবিআই। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর এক পুলিশ কর্মকর্তার কাছে ফোনে এ হুমকি দেওয়া হয়।

আইরিশ পাবে নিয়মিত যাতায়াত করা সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে এক ব্যক্তি ফোনকলে রানি হত্যার হুমকি দেয়। ওই পাবে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে ওই ব্যক্তির পরিচয় হয়েছিল। ফোনে সেই ব্যক্তি বলেছিলেন, উত্তর আয়ারল্যান্ডে তার মেয়েকে গুলি করে হত্যার প্রতিশোধ নিতে চান তিনি।

এমন হুমকি আসে ১৯৮৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপের ওয়াশিংটন সফরের প্রায় এক মাস আগে। রয়েল ইয়াট ব্রিটানিয়ায় গোল্ডেন গেট ব্রিজের ওপর থেকে কিংবা ইয়োসেমাইট জাতীয় উদ্যানে রানির সফরের সময় তাকে হত্যা করা হবে বলে জানিয়েছিল সেই ব্যক্তি।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রানির সফরের সময় গোল্ডেন গেট দিয়ে প্রবেশের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে ইয়োসেমাইট জাতীয় উদ্যানে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল তা এফবিআই এর প্রকাশিত নথি থেকে জানা যায়নি।

এর আগে ১৯৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার দ্বিশতবর্ষ উদযাপনের জন্য নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলেন প্রয়াত রানি। সে সময় ছোট একটি প্লেনের মাধ্যমে পাইলট এমন একটি সাংকেতিক বার্তা দিয়েছিলেন যাতে লেখা ছিল, ‘আয়ারল্যান্ড থেকে বেরিয়ে যাও ইংল্যান্ড’।

১৯৭৯ সালে রানির জ্ঞাতি ভাই লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনকে বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে হত্যা করে আইরিশ রিপাবলিকান আর্মি (আইআরএ) নামক সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী। আয়ারল্যান্ডের স্লিগো শহরে এ বোমা হামলা ঘটে।

১৯৮৯ সালে প্রয়াত রানির যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি রাজ্য সফরের সময়েও তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল আইআরএ। এছাড়া বেশ কয়েকবার কেনটাকি সফর করেছিলেন প্রয়াত রানি।

এফবিআই প্রকাশিত নথিতে রানিকে আরও বেশ কয়েকটি হত্যার হুমকি ও চেষ্টার সম্পর্কে জানা গেছে। এসব হুমকির বেশিরভাগই এসেছিলো আইআরএ-এর থেকে।

উল্লখ্য, এ গোষ্ঠীটি উত্তর আয়ারল্যান্ডকে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরে সশস্ত্র সংগ্রাম ও আন্দোলন করে আসছে।