গাজায় যুদ্ধবিরতি ‘এক সপ্তাহের মধ্যেই’ সম্ভব:  ট্রাম্প

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এক সপ্তাহে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব বলে মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (২৭ জুন) হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে কঙ্গো-রুয়ান্ডা চুক্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ট্রাম্প, যা অনেককে চমকে দেয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, তার বিশ্বাস, গাজায় এখন একটি যুদ্ধবিরতি খুব কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছে। যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালানো কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার পর তিনি আশাবাদী হয়েছেন বলেও জানান। যদিও তিনি কার সঙ্গে কথা বলেছেন, তা প্রকাশ করেননি।

তবে প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা মনে করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই আমরা একটি যুদ্ধবিরতি পেতে যাচ্ছি।’

আল জাজিরার রিপোর্টার নূর ওদেহ বলেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত ও অনাহারে থাকা জনগণের জন্য ‘স্বাগত সংবাদ’ হতে পারে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এই মুহূর্তে অঞ্চলের কোথাও কোনও বাস্তব আলোচনার প্রক্রিয়া চলছে না।’

এদিকে যুদ্ধবিরতি বিষয়ে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস বলেছে, যুদ্ধ শেষ করার যেকোনো চুক্তির আওতায় গাজায় থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দিতে তারা প্রস্তুত।

তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধ তখনই শেষ হবে, যখন হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্র ও বিলুপ্ত করা যাবে।

অবশ্য হামাস অস্ত্র সমর্পণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

ট্রাম্পের এই যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যদ্বাণী এমন এক সময়ে এসেছে, যখন গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যাকাণ্ড বেড়েই চলেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ইসরায়েলের যুদ্ধনীতি নিয়ে নিন্দা বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাদের অস্ত্রহীন ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের—যারা মানবিক সহায়তা চাইছিল—তাদের গুলি করার আদেশ দেওয়া হয়েছিল।

গাজার কর্তৃপক্ষ বলেছে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ-এর এই প্রতিবেদন প্রমাণ করে যে, ইসরায়েল গাজায় ‘যুদ্ধাপরাধ’ চালাচ্ছে।

যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্টজ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

এদিকে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেন, গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আপাতত তাদের কাছে শেয়ার করার মতো কোনো তথ্য নেই।

উল্লেখ্য, ট্রাম্প জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার আগে উইটকফ সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সহযোগীদের সঙ্গে এক যুদ্ধবিরতি ও বন্দিমুক্তি চুক্তি করাতে সহায়তা করেছিলেন। তবে মার্চ মাসে ইসরায়েল একতরফা বোমা হামলার মাধ্যমে সেই যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে।

সূত্র মতে, ইসরায়েলের কৌশল বিষয়কমন্ত্রী রন ডারমার আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফর করবেন, যেখানে তিনি গাজা, ইরান এবং সম্ভবত নেতানিয়াহুর হোয়াইট হাউজ সফর নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন।