চাকরি রাজস্বকরণের দাবি কমিউনিটি ক্লিনিক কর্মীদের

চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত

চাকরি রাজস্বকরণের দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের কার্যালয় অবরোধ করেছেন কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা। এসময় অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ অন্যরা কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। চার ঘণ্টা পর মহাপরিচালকের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নিয়ে আন্দোলনকারীদের একাংশ প্রেসক্লাবের সামনে চলমান অবস্থান কর্মসূচিতে ফিরে যান।

অবস্থান কর্মসূচিতে কমিউনিটি ক্লিনিক কর্মীরা (ছবি: ফোকাস বাংলা)বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএইচসিপিএ) এক নেতা মোহাম্মদ সুমন মাদবর জানান, রবিবার প্রেসক্লাবের সামনে একটি গ্রুপ অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যায়। অন্যগ্রুপ মহাখালীতে প্রধান কার্যালয় অবরোধ করে। দুপুর একটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কার্যালয় অবরোধ করে রাখা হয়।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক হাবিবে মিল্লাত, লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক আবুল হাসেম খানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা বিএমআরসি ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছিলেন। আমরা তখন নিচে অবস্থান নেয়। এই অবস্থানের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এসে আমাদের আশ্বস্ত করেন যে, তারা আজ আমাদের বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছেন। আবার আগামীকাল তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করছি। আগামীকাল সোমবার বৈঠকের পর আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। আমরা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে অবস্থান করছি। আমাদের সহকর্মীরা অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’

এর আগে গত ২০, ২১ ও ২২ জানুয়ারি থেকে স্ব স্ব উপজেলার কমপ্লেক্সে বিসিএইচসিপিএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরি রাজস্বখাতে অন্তর্ভূক্তির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বারকলিপি প্রদান করে। কিন্তু তার কোনও জবাব না পেয়ে গত ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি অবস্থান ধর্মঘট পালন করে প্রধানমন্ত্রীকে পুনরায় স্মারক দেওয়া হয়। দু’বার স্মারকলিপি দিয়েও তার উত্তর না পাওয়ায় গত ২৭ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানেই শুরু করেন অনশন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সরিয়ে দিলে তারা মহাখালীর প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।

জানা গেছে, এরই মধ্যে আমরণ অনশন কর্মসূচির নেতৃত্ব দেওয়ায় আট জনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এর মধ্যে গত ২০ ফেব্রুয়ারি ট্রাস্ট গঠনের লক্ষ্যে চার সদস্যের কমিটি গঠনকরা হয়। চাকরি রাজস্বকরণ না করে ট্রাস্ট গঠনের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনার উদ্যোগ বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন কর্মীরা।

তারা বলছেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট গঠনের আইন চূড়ান্ত করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল হক খানের নেতৃত্বে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।’ কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে স্বপ্ন ছিল, এই ট্রাস্ট গঠন হলে সেই স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তারা।