৭৬ ভাগ বাল্যবিয়ে হয় রংপুর বিভাগে

অভিজ্ঞতা বিনিময় সভাদেশে রংপুর বিভাগে ১৮ বছরের আগে বিয়ের হার ৭৬ ভাগ, যা সবচেয়ে বেশি। আর বরিশাল বিভাগে এই হার ৭০ ভাগ, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৩ সালের বিবিএস এর মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাসটার সার্ভে-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ তথ্য উঠে এসেছে।

সোমবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘তারুণ্যের শক্তি: আমরাই পারি বাল্যবিবাহ রুখে দিতে’ প্রকল্পের অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। ব্র্যাক থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়— গার্লস নট ব্রাইডসের আয়োজনে মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।  

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটি মূলত প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে মেয়েদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধকরণে ভূমিকা রাখে। আর এটি বাস্তবায়নে জোটের সচিবালয়ের দায়িত্বপালনকারী সংস্থা ব্র্যাকের নেতৃত্বে সদস্য সংস্থাসমূহ সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকে। রংপুরের মিঠাপুকুর, গঙ্গাচড়া, তারাগঞ্জ, পিরগাছা ও কাউনিয়া এবং বরিশালের আগৈলঝাড়া, মুলাদি, হিজলা, বাকেরগঞ্জ ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।

এই পরিস্থিতি পরিবর্তনে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সমমনা কয়েকটি সংগঠনের উদ্যোগে গঠিত গার্লস নট ব্রাইডস বাংলাদেশ জোটের পক্ষ থেকে এই জেলা দুটিতে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। দুই বছর মেয়াদী প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শেষ হবে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই। প্রকল্পের শেষ সময়ে এর কার্যকারিতা ও প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাসমূহ তুলে ধরতে এই সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় ব্র্যাকের পরিচালক আন্না মিনজ বলেন, ‘অভিজ্ঞতায় দেখা যায় কোনও এলাকায় অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি বা সুশীল সমাজ যাদেরই সাক্ষাৎকার নেওয়া হোক না কেন, তারা দাবি করেন নিজেদের এলাকায় বাল্যবিয়ে হয় না, বরং তাদের এলাকা থেকে পালিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে- মেয়েরা অন্য এলাকায় বিয়ে করেন।’

ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির প্রধান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাল্যবিয়ে এখন মানবাধিকার লংঘনও বটে। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, সরকারি-বেসরকারি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজসহ সবাই এক প্ল্যাটফর্মে কাজ করলে বাল্যবিয়ে বন্ধে কার্যকর ফল আসে। সচেতনতাসহ বিভিন্ন কারণে তখন ঐক্যবদ্ধ শক্তির পাশাপাশি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নেটওয়ার্কিং তৈরি হয়।’

ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির সমন্বয়কারী নিশাত সুলতানার সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক কনসালট্যান্ট কাজী আরিফুল হকসহ সরকারি-বেসরকারি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি।