নিরাময় অযোগ্য রোগীদের বেদনাহীন রাখবে ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জ’

নিরাময় অযোগ্য রোগীদের জীবন বেদনাবিহীন ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে ‘মমতাময় নারায়ণগঞ্জ’ প্রকল্পের। আজ বুধবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। নারায়ণগঞ্জের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে প্রকল্পটির উদ্বোধনী ও পরিচিতিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিএসএমএমইউয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মজুমদারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।মমতাময়-নারায়ণগঞ্জ

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা ইউকেএইডের অর্থায়নে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বিএসএমএমইউ এবং ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড হসপিস প্যালিয়েটিভ কেয়ার এলায়েন্সের’ (ডাব্লিউএইচপিসিএ)যৌথ উদ্যোগে তিন বছর মেয়াদী সেবা ও গবেষণামূলক এই প্রকল্প চালু করা হলো।

বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া জানিয়েছেন, ৭২ দশমিক ৪৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে বসবাসরত ২২ লক্ষ মানুষের মধ্যে প্রায় ৭ হাজার ৫শ থেকে ৮ হাজার লোকের প্রত্যক্ষভাবে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রয়োজন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউকেএইডের নির্বাহী পরিচালক ডা. স্টিফেন আর. কনর ওই সংগঠনের বিশ্বব্যাপী কার্যক্রম, প্যালিয়েটিভ সেবার প্রয়োজনীয়তা ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন।

সভাপতির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, ৬৪টি জেলাতেই প্যালিয়েটিভ কেয়ারের সুযোগ থাকা উচিত। প্যালিয়েটিভ শব্দটি মানুষের কাছে এখনও একটি নতুন শব্দ। নারায়ণগঞ্জবাসীর মাঝে প্যালিয়েটিভ সেবা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমেই এই বিষয়টির প্রতি মানুষকে পরিচিত করে তুলব।’

স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, অতি সম্প্রতি প্রকাশিত ল্যানসেট কমিশনের রিপোর্ট অনুসারে, পৃথিবীব্যাপী ৬ কোটি ১১ লাখ মানুষের প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রয়োজন হয়, যাদের শতকরা ৯০ ভাগই সেবা পেতে ব্যর্থ হন। ফলে ব্যথা-বেদনা ও ভোগান্তির শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। সাধারণ পরিসংখ্যান অনুসারে, বাংলাদেশে প্রায় ৬ লক্ষ মানুষের এই সেবা প্রয়োজন। বর্তমানে অত্যন্ত সীমিত আকারে শুধু ঢাকায় অল্প সংখ্যক মানুষ প্যালিয়েটিভ কেয়ার পেয়ে থাকেন।

বিএসএমএমইউতে ২০০৭ সালে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে ঢাকা রোটারি ক্লাবের সহায়তায় এই কার্যক্রম আরও জোরদার হয়। সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান ২০১১ সালে ‘সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ারের’ উদ্বোধন করেন যার মধ্য দিয়ে সংস্থাটি পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ শুরু করে।