কীটতত্ত্ববিদরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে মশার লার্ভা সংগ্রহ করেছেন। এগুলোর মধ্যে এডিস ও কিউলেক্স দুই প্রজাতির মশাই রয়েছে।
জরিপ দলের প্রধান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন হতে যাচ্ছে যে, ঢাকাবাসী এর আগে এত মশা কখনও দেখেননি। তাই অতিদ্রুত মশা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো আগামী ১৫ দিনে কিউলেক্স মশার ঘনত্ব রেকর্ড ছাড়াবে।’
২০০০ সাল থেকে মশা জরিপ নিয়ে কাজ করছেন ড. কবিরুল বাশার। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মশা গবেষণার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘দেশে মশা নিয়ে এমন কোনও গবেষণা হয়নি যার সঙ্গে আমি ছিলাম না। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আমি কথাগুলো বলছি।’
ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার প্রজননস্থল সর্ম্পকে কবিরুল বাশার বলেন, ‘আগামী কয়েকদিন পর বৃষ্টি হলে যদি আমরা পাত্রে বৃষ্টির পানি জমতে দিই, তবে মশা হঠাৎ করে বেড়ে যাবে। তাই এ ধরনের পাত্র ধ্বংস করতে ঢাকাজুড়ে অভিযান পরিচালনা করা দরকার।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, মশার প্রজননস্থল শনাক্ত করতে তারা বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করতে যাচ্ছে।
তবে সিটি করপোরেশনের অভিযানের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে জানিয়ে এই গবেষক বলেন, ‘বাড়ির আশপাশে কোথাও যেন পাত্র পড়ে না থাকে, সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকেও। এডিস নিয়ন্ত্রণের কাজটা শুরু করতে হবে এ মাসেই।’
কী কারণে মশার এমন ভয়ংকর রূপ হবে জানতে চাইলে কবিরুল বাশার বলেন, ‘ঢাকার তাপমাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া, বৃষ্টিপাত না হওয়া ও পানিতে অর্গানিক ম্যাটার বেড়ে যাওয়া—মশা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ এগুলো।’
তিনি বলেন, ‘হাফলিটার পানিতে যদি ২০০ মশার লার্ভা পাওয়া যায় তখনই একে ‘মশার ডেনসিটি অনেক’ বলা হয়ে থাকে। একইসঙ্গে এমনিতেই প্রজননস্থলে ডিম দেখা যায় না। কিন্তু আমরা ডিম ভাসতে পর্যন্ত দেখেছি। তার মানে হচ্ছে, অনেকগুলো ফ্যাক্টর একসঙ্গে এবার যোগ হয়েছে। আর এসব ডিম আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ মশায় রূপান্তরিত হবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করতে হবে।’
তবে এ ব্যাপারে জানতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তফার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।