করোনা ‘পজিটিভ’ রোগীকে ‘নেগেটিভ’ রিপোর্ট!

একই তারিখে করোনা নেগেটিভ-পজিটিভ রিপোর্টগত ১৪ জুলাই ডেন্টিস্ট মুশফিকুর রহমানের উত্তরার বাসায় গিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবএইড। এরপর ১৫ জুলাই মোবাইল ফোনে ক্ষুদেবার্তায় তার করোনা পজিটিভ বলে জানানো হয়। তবে সেদিনই হার্ডকপি সংগ্রহ করলে দেখা যায় রিপোর্ট নেগেটিভ লেখা। আর সে কথা জানানোর পর ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ পরে আবার একই তারিখ দিয়ে পজিটিভ রিপোর্ট দেয়। তবে এর আগে তারা মুশফিকুর রহমানকে ইমেইলে সরি লিখে ক্ষমা চায়।

সোমবার (২৭ জুলাই) মুশফিকুর রহমানের একইদিনের (১৫ জুলাই) করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট একটিতে নেগেটিভ, আরেকটিতে পজিটিভ জানার পর যোগাযোগ করা হয় তার সঙ্গে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অসুস্থ হবার পর বাসা থেকে বের হতে চাইনি। বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজছিলাম। আর যেহেতু ল্যাবএইড একটি প্রতিষ্ঠিত বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান তাই করোনা পরীক্ষার জন্য তাদেরকেই বিশ্বাস করেছিলাম। মহামারীর এই সময়ে ল্যাবএইডের কাছে এরকম আশা করা যায় না। আমি চিকিৎসক বলে ধরতে পেরেছিলাম, কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে সেটা সম্ভব নয়। আর একজন পজিটিভ রোগীকে যখন নেগেটিভ বলা হয়, তখন সংক্রমণের ঝুঁকিটা আরও কতোটা বেড়ে যায় সেটা এখন সবাই জেনে গেছে।’

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘নমুনা নিয়ে যাওয়ার পরদিনই তারা মোবাইল ফোনে ক্ষুদেবার্তায় রিপোর্ট পজিটিভ জানায়। সেদিন সন্ধ্যাতেই ল্যাবএইড থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, রিপোর্টের প্রিন্টেড কপি এসেছে। সেটা যখন পেলাম তখন লেখা নেগেটিভ। তারপরই ফোন দিয়ে তাদেরকে জানাই। তাদেরকে বলি, আমি নিজে একজন চিকিৎসক, আমি বুঝতে পারছি আমার শারীরিক অবস্থা। কিন্তু যদি নেগেটিভ ধরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করি তাহলেতো সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। আপনারা একটু চেক করেন। পরে তারা জানান, স্যার একটু ভুল হয়েছে, প্রিন্টিংয়ে মিসটেক হয়েছে। পরের দিন একই ডেট দিয়ে তারা পজিটিভ রিপোর্ট দিয়ে যায় আমাকে।’

ল্যাবএইড থেকে দেওয়া মুশফিকুর রহমানকে মেইলের জবাবমুশফিকুর রহমান জানান, নিজের প্রয়োজনেই তিনি নেগেটিভ-পজিটিভের বিষয়টি জানার পর ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষকে ইমেইল করেন। সে মেইলে দেখা যায়, ল্যাবএইড থেকে দেওয়া ফিরতি মেইলে তাকে বলা হয়, তিনি পজিটিভ হলেও তার প্রিন্টেড কপিতে নেগেটিভ লেখার জন্য ‘প্রিন্টেড মিসটেক’ এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সে মেইলে মি. বাশার এবং হাসিনুর নামের দুই জনকে মেনশন করে ভবিষ্যতে আরও সতর্ক হওয়ার জন্য বলা হয়। সেখানে তাদের প্রতি ডাবল চেক এবং ক্রস চেক করার জন্যও বলা হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ল্যাবএইড হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের ই খোদা দীপ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিষয়টি শুধুই প্রিন্টিং মিসটেক, আর কিছু না। তবে বিষয়টি নজরে আসার পরই হাসপাতাল থেকে এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করা হয়েছিল, যে এই কাজ করেছিল তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে আগে দুই ধাপে নজরদারি করে ফলাফল দেওয়া হলেও এখন ছয়টি ধাপে ফলাফল দেওয়া হচ্ছে।’