বন্যাকবলিতদের সহায়তায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর যেসব নির্দেশনা

বন্যাকবলিত এলাকায় গুরুতর রোগীকে জরুরি প্রয়োজনে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার (২৭ জুন) সিলেটে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনসহ  জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক, বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা এবং বেসরকারি হাসপাতালের মালিক, সংগঠন ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ওই সভায় মন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।   

এর আগে সোমবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলার  বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকাসহ নেত্রকোনা ও সিলেট জেলার বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সকালে ঢাকার তেজগাঁও পুরান বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম সাদি এবং মন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. রেয়াজুল হক এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে  ছিলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন ও সেখানে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। এরপর এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সভায় বন্যাদুর্গত মানুষের চলমান স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অবগত করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সেখানে বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাসহ সব ধরনের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেন। তিনি বন্যাকালীন ও বন্যা পরবর্তী সময়ে সম্ভাব্য রোগের প্রাদুর্ভব মোকাবিলা এবং কোভিড সংক্রমণের  ঊর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দিকনির্দেশনা দেন।

এসময় জাহিদ মালেক বলেন, ‘বন্যাকবলিত মানুষগুলো আমাদেরই ভাই, আমাদেরই বোন। তারা এখন পানিবন্দি জীবন-যাপন করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক নির্দেশনায় তাদের ঘরে ঘরে শুকনা খাবার নিশ্চিত করা হয়েছে। পানিবাহিত নানা রোগব্যাধি থেকে মুক্ত রাখতে স্বাস্থ্যখাতও জোড়ালোভাবে এগিয়ে এসেছে। এসব এলাকায় এখন সাপের কামড় থেকে বাঁচাতে দ্রুত অ্যান্টিভেনম  ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন সরবরাহ করতে হবে। কোভিড সমস্যায় জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। জরুরি প্রয়োজনে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে গুরুতর কোনও রোগীকে ঢাকায় প্রেরণ করতে হবে। বন্যাকবলিত এলাকায় স্বাস্থ্যসেবার কোনও ঘাটতি মেনে নেওয়া হবে না।’

বন্যার্ত মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বিক নির্দেশনা দিয়েছেন উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বন্যার্ত মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বক্ষণিক নির্দেশনা রয়েছে। তিনি বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের সব মহলকে নির্দেশনা দিয়েছেন। বন্যাদুর্গত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা ও সমবেদনা জানাতে তিনি নিজেও এসেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে বন্যায় কারও খাদ্য, চিকিৎসার কোনও ব্যত্যয় হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা ও নেতৃত্বে আমরা বন্যা ও কোভিড মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি, এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। স্থানীয় প্রশাসন,পুলিশ বাহিনী, বিভিন্ন সংগঠন, সেনাবাহিনীসহ সবাই সহযোগিতা করেছে, এজন্য সবাইকেই ধন্যবাদ। ইনশাল্লাহ,  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আগামী দিনেও দেশের যেকোনও দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা সক্ষম হবো।

মতবিনিময় সভা শেষে মন্ত্রী সেখানে কর্মরত সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছে আরও কিছু ত্রাণসামগ্রী দুর্গম এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য হস্তান্তর করেন। এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিলেটে হযরত শাহজালাল (রা.) এর মাজার জিয়ারত করেন।

বন্যাকবলিত মানুষের কল্যাণের জন্য করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুবিন খান, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খান, এমপি সহ সিলেট জেলা প্রশাসন ও জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।