দেশে এইচআইভি রোগী ৯৭০৮

বর্তমানে বাংলাদেশে শনাক্তকৃত এইচআইভি রোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ৭০৮ জন বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানান, এর মধ্যে ৬ হাজার ৭৫ জন্য চিকিৎসাধীন এবং এক হাজার ৮২০ জন মারা গেছে।

রবিবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্ন উত্তর পর্বে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য  লুৎফুন নেসা খানের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব প্রশ্ন উত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

বর্তমানে ১১টি সরকারি হাসপাতাল হতে এইচআইভি রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২৩টি সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে এইচআইভি পরীক্ষা করা হচ্ছে। ৮টি এনজিও প্রতিষ্ঠান হতে ড্রাগ ইউজারদের বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এবং সরকারি ও বেসরকারি মিলে ১৩৪টি ড্রপ-ইন-সেন্টার হতে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীদের মধ্যে এইচআইভি প্রতিরোধমূলক সেবা প্রদান করা হচ্ছে।’

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের শতকরা ১০-১২ ভাগ মানুষ থালাসেমিয়া এবং হিমোগ্লোবিন ই রোগের বাহক। বর্তমানে দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার।’

এম আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভ্রুণ অবস্থা হতে আমৃত্যু থাইরয়েড হরমোনের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। বর্তমানে দেশে কত শতাংশ মানুষ থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছে— এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ হতে এখনও পর্যন্ত জরিপ করা হয়নি। জনস্বার্থে এ রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।’

সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ২৬০৫ শিক্ষকের পদ খালি

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহাম্মেদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে পাঁচ হাজার ৫৮৯টি অনুমোদিত ক্যাডার পদের বিপরীতে শূন্য পদ দুই হাজার ৬০৫টি।  সংযুক্ত হিসাবে কর্মরত এক হাজার ৩৬৯ জন।  মেডিক্যাল কলেজগুলোতে সরাসরি শিক্ষক নিয়োগ করা হয় না। মেডিক্যাল কলেজের প্রভাষক পদে মেডিক্যাল অফিসার হতে বিষয়ভিত্তিক পদায়ন করা হয়। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ হতে বেসিক বিষয়ে চলতি দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে ৩৬৯ জনকে সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপক পদে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে পদায়ন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দুই হাজার ছয়শ’ শয্যার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক রোগী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করার ফলে এই হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম-এ কিছুটা অসুবিধা হয়। তবে সরকার রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে ডিএমসির শয্যা পাঁচ হাজারে উন্নীত করার পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করেছে।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসানের প্রশ্নের জবাবে দেশের সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সর্বমোট বেড ১৯ হাজার ৩০০টি। উপজেলা হাসপাতালগুলো পরিচালনার জন্য ওষুধপত্রসহ এমএসআর খাতে বেড অকুপেন্সি রেট অনুয়ায়ী রাজস্ব বাজেট থেকে বছরে টাকা বরাদ্দ করা হয়ে থাকে এবং বরাদ্দকৃত টাকার মধ্যে ৭০ শতাংশ টাকা ওষুধ বাবদ ব্যয় করা হয়।

উল্লেখ্য, গত অর্থবছরে ৪২৯ কোটি,৮৩ লাখ  ২৮ হাজার ৮০০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক জানান, সরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের ফি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে টিউশন ফি নির্ধারণের বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। সে নির্দেশনা অনুসরণ করে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নির্ধারণ করে থাকে। এ বিষয়গুলো মনিটরিং এর জন্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।

আরও দুটি উদ্ধারকারী জাহাজ কেনার প্রক্রিয়া চলছে

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসান নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশের নৌপথে দুর্ঘটনায় নৌযান উদ্ধারে বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ'র দুইটি ৬০ টন (বিআইডব্লিউটিএ-হামজা ও বিআইডব্লিউটিএ-রুস্তম) ও বিআইডব্লিউটিএ'র দুইটি ২৫০ টন (বিআইডব্লিউটিএ-নির্ভীক ও বিআইডব্লিউটিএ-প্রত্যয়) ক্ষমতা-সম্পন্ন উদ্ধারকারী জাহাজ রয়েছে। বর্তমানে আরও দুটি দুই হাজার টন ক্ষমতা-সম্পন্ন উদ্ধারকারী জাহাজ সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।