নন্দিতার ‘চোখে’ আলো দেখছেন তারা

ঢাকার বাসাবোর বাসিন্দা নন্দিতা বড়ুয়ার কর্নিয়ায় চোখে আলো দেখছেন পটুয়াখালীর দলিল লেখক আব্দুল আজিজ (৫০) ও রাঙ্গামাটির কাউখালি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস (২৩)। নন্দিতা বড়ুয়ার মরণোত্তর দেহদানের কারণেই আলো ফিরেছে তাদের চোখে।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এনাটমি বিভাগের পক্ষে নন্দিতা বড়ুয়ার মরণোত্তর দেহ গ্রহণকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

এ সময় বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, ‘নন্দিতা বড়ুয়ার এই মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা করি। তার দুই মেয়ে শাপলা বড়ুয়া ও সেজুতি বড়ুয়াসহ পরিবারের সবার কাছে এই ত্যাগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। দেশের প্রথম ক্যাডাভেরিক অঙ্গদাতা হিসেবে সারা ইসলাম বাংলাদেশের মানবকল্যাণে দেহদানে ইতিহাস হয়ে থাকবেন। তার পথ অনুসরণ করে আজ অনেকেই ক্যাডাভেরিক অঙ্গদান ও মরণোত্তর দেহদানের আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘নন্দিতা বড়ুয়ার অবদান মানবজাতি মনে রাখবে। গত একমাসে মরণোত্তর চক্ষুদান প্রক্রিয়ায় ১২ জনের চোখে সফলভাবে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করেছি। কর্নিয়া গ্রহীতারা বেশ ভালো আছেন।’ তিনি দেশের সব মানুষদেরও এমন মহৎ কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ আরও যোগ করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা বেগবান করা হয়েছে। গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধির সঙ্গে নানান উদ্যোগ নিচ্ছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষণার কাজে দেশের মানুষকে সম্পৃক্ত করার একটি প্রয়াস হলো এই মরণোত্তর দেহদান।’

নন্দিতা বড়ুয়ার দেহ গ্রহণকালে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শাহ আলম, হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার (টিটো), কর্নিয়াগ্রহীতা জান্নাতুল ফেরদৌস ও আব্দুল আজিজসহ এনাটমি বিভাগের শিক্ষক ও রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে নন্দিতা বড়ুয়ার দুই মেয়ে শাপলা বড়ুয়া এবং সেজুতি বড়ুয়াও মরণোত্তর দেহদানের ইচ্ছা পোষণ করেন।