শিশুদের বেশিরভাগই ডেঙ্গু ‘ডেন-২’ এ আক্রান্ত: গবেষণা

দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যেসব শিশু হাসপাতালে আসছে, তাদের মধ্যে ৮৭ শতাংশই ‘ডেন-২’ জীনগত ধরনে আক্রান্ত। এছাড়া বাকি ১৩ শতাংশ শিশু ‘ডেন-৩’ এ আক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব এবং গবেষণা বিভাগের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে শিশু হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন হাসপাতালটির পরিচালক ও এ গবেষণার প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম।

গবেষকরা জানান, ২০২৩ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত এক হাজার ৩৯ শিশুর মধ্যে ৭২২ জনকে রোগতাত্ত্বিক গবেষণার জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ডেঙ্গু ভাইরাসের সেরোটাইপ নির্ধারণ এবং অন্যান্য ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্তে ওই শিশুদের মধ্যে ১০৪ জনের রক্ত ও ন্যাজোফ্রানজিয়াল সোয়াব সংগ্রহ করে আইসিডিডিআর,বি’র পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়।

একইসঙ্গে ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ ছিল, কিন্তু এনএস-১ অথবা আইজিএম পরীক্ষায় ডেঙ্গু ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত সম্ভব হয়নি— এমন ৫০ রোগীর রক্ত ও ন্যাজোফ্রানজিয়াল সোয়াবও সংগ্রহ করে আইসিডিডিআর,বির পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, এনএস-১ এবং আইজিএম নেগেটিভ ৫০টি নমুনার মধ্যে আরটি পিসিআর পরীক্ষার মাধ্যমে ১৭টি (৩৪ শতাংশ) ফলস নেগেটিভ পাওয়া যায়। ডেঙ্গু নেগেটিভ রোগীর মধ্যে ১৯ শতাংশ রোগী এবং ডেঙ্গু পজিটিভ রোগীর মধ্যে ১২ শতাংশ রোগী অন্যান্য ভাইরাসের সংক্রমণে (ইনফ্লুয়েঞ্জা ও রেসপাইরেটরি সিনসাইটাল ভাইরাস) আক্রান্ত ছিল।

জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষায় দেখা যায়, ১১৩টি ডেঙ্গু পজিটিভ নমুনায় ৮৭ শতাংশ ‘ডেন-২’ এবং ১৩ শতাংশের ‘ডেন-৩’ ধরনের উপস্থিতি পাওয়া যায়। যে শিশুদের ভেতর ৮৭ শতাংশ ‘ডেন-২’ ধরনের উপস্থিতি দেখা গেছে, তার জীনগত বৈশিষ্ট্য ২০১৮ সালের ‘ডেন-২’ এর জীনগত বৈশিষ্ট্যের কাছাকাছি। এমনকি যে ১৩ শতাংশের ‘ডেন-৩’ ধরনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, তার জীনগত বৈশিষ্ট্য ২০১৭ সালের ‘ডেন-৩’ এর জীনগত বৈশিষ্ট্যের কাছাকাছি।

এ সময় অধ্যাপক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গবেষণার অংশ হিসেবে পূর্ণাঙ্গ সিকোয়েন্সিংয়ের কাজ চলমান। ফলাফল হাতে পেলে আরও বেশি তথ্য উপস্থাপন করতে পারবো।’