বিএনপি অন্ধ হলেও জনগণ অন্ধ নয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বিএনপি যে জ্বালাও-পোড়াও করে, মানুষের জানমালের ক্ষতি করে ক্ষমতায় যেতে চায়, দেশের মানুষ এখন তা বোঝে। মানুষ বোঝে বিএনপির দুঃশাসনের সময় বিএনপি বিদ্যুৎ দিতে পারেনি, খাদ্যে মজুত রাখতে পারেনি, চিকিৎসা দিতে পারেনি এবং দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তারা চোখ থাকতে দেখতে পায় না।

তিনি আরও বলেন, তবে তারা (বিএনপি জোট) অন্ধ হতে পারে কিন্তু দেশের জনগণ অন্ধ নয়। জনগণ ভালোই বোঝে, শেখ হাসিনার হাতে দেশ কত নিরাপদ আর বিএনপি ক্ষমতা নিলে দেশ কতটা অনিরাপদ।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ডক্টর'স কোয়ার্টার্স সংলগ্ন নবনির্মিত স্টাফ কোয়ার্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাহিদ মালেক বলেন, প্রতিদিনই বাংলাদেশের আনাচকানাচে শেখ হাসিনার উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পাতালপথ, উড়াল সেতু, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, বিদ্যুতের ঘাটতি দূর, প্রতিটি জেলায় হাসপাতালের বেড দ্বিগুণের বেশি করা, প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ১০ বেডের অতিরিক্ত ডায়ালাইসিস বেড করা, আট বিভাগে আটটি ১ হাজার ৫০০ শয্যার ক্যানসার কিডনি হাসপাতাল করা; এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলে কমিউনিটি ক্লিনিক করে ৩০ রকমের ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া থেকে শুরু করে করোনা মহামারি মোকাবিলায় বিশ্বে পঞ্চম স্থান অর্জন করাসহ সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ এগুলোর কিছুই বিএনপি চোখে দেখে না।

বর্তমান সরকার ইস্পাতের মতো শক্ত উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা সরকার ইস্পাতের মতো শক্ত ও মজবুত। রাস্তা অবরোধ করে বা জ্বালাও-পোড়াওয়ের মতো অপরাজনীতি করে এই ইস্পাতকঠিন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষমতা অন্তত বিএনপির নেই।

দেশের সরকারি হাসপাতালে মানুষের প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসার আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হিসাব অনুযায়ী দেশের কেবল সরকারি হাসপাতালগুলোতেই মাসে গড়ে ৩৬ কোটি মানুষ সেবা নিচ্ছে। সরকারি হাসপাতালের প্রতি আস্থা না থাকলে, চিকিৎসা না পেলে মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসতো না। সব হাসপাতালের বেড দ্বিগুণের বেশি করার পরও মানুষ জায়গা না পেয়ে ফ্লোরেও চিকিৎসা নিচ্ছে।

চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ বছরে ১৬ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অথচ এর আগের বিগত ৪৫ বছরে চিকিৎসক ছিল মাত্র ১৫ হাজার। নার্স নেওয়া হয়েছে ২০ হাজার, অন্যান্য পদেও হাজার হাজার লোক নেওয়া হয়েছে। নতুন করে অনেক ইন্সটিটিউট, হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ ও মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছে। এগুলো সবই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান। এগুলো করা হচ্ছে মানুষের চিকিৎসাসেবা বাড়াতে।

অথচ অনেক নেতিবাচক সমালোচনা করা হয়। কিন্তু দেশের মানুষের সংখ্যা যে অনেক বেশি, এত বেশি সংখ্যক মানুষের চিকিৎসা দিতে কিছুটা এদিক-সেদিক হলেই সেটা নিয়ে সমালোচনা করা হয়। স্বাস্থ্যের যে অনেক ভালো কাজ হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয় না, বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জন্য ২৫ শতাংশ হার্টের রিং (স্টেন্ট) বিনামূল্যে দেওয়ার ঘোষণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক মীর জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আখতারুজ্জামান, স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক কামরুল হাসান মিলন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) রাশিদা আকতারসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।