শিশুদের ক্যানসার হয়, সেটি অনেকে জানে না: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শিশুদের ক্যানসার হয়, সেটি অনেকে জানে না। শিশুরা অসুস্থ হলে নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হয়। এসব পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, শিশু কোন রোগে আক্রান্ত হয়।  তিনি বলেন, ‘শিশুরা ক্যানসার আক্রান্ত হলে, নিয়মিত চিকিৎসা করালে তা নিরাময় করা সম্ভব।’

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ‘যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসায় শিশু ক্যানসার নিরাময় সম্ভব’  প্রতিপাদ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ‘আন্তর্জাতিক শিশু ক্যানসার দিবস’ পালিত হয়েছে। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু হেমাটোলোজি ও অনকোলোজি বিভাগ এ উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করে। এসব কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে একথা বলেন অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-ব্লক থেকে শুরু হয়ে ডি- ব্লক হয়ে সি-ব্লকে গিয়ে শেষ হয়।

এসব কর্মসূচিতে জানানো হয়, প্রতি বছর বিশ্বে অন্তত চার লাখ শিশু ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। উন্নত দেশগুলোতে ক্যানসার থেকে রোগীর সুস্থ হওয়ার হার প্রায় ৮০ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশে এ হার প্রায় ৩০ শতাংশ। তবে যথাসময়ে ক্যানসার শনাক্ত করা গেলে এবং উন্নত চিকিৎসা পেলে ৭০ শতাংশ রোগী ভালো হয়। সচেতনতার অভাব, মাত্রাতিরিক্ত চিকিৎসার ব্যয়, স্বাস্থ্যসেবার সুযোগের অভাবসহ নানা কারণে বেশির ভাগ ক্যানসার আক্রান্ত শিশু মারা যায়।

শোভাযাত্রা উদ্বোধনকালে অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শিশু ক্যানসার নিয়ে গবেষণা চলমান রয়েছে। শিশুদের ক্যানসার নিরাময়ের জন্য  আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট  করা হয়। এরইমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ-ব্লকে কম খরচে সফলভাবে বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্ন হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শিশুদের বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার জন্য নানান উদ্যোগ নিয়েছি।’

উপাচার্য বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাওয়া— ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে স্মার্ট দেশে রূপান্তর করা। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাস্থ্য খাতকেও স্মার্ট করে গড়ে তুলবো। যাতে দেশের কোনও রোগীকে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা  করাতে না হয়। দেশের রোগীরা দেশেই চিকিৎসা পাবেন। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল করে দিয়েছেন। এখানেই বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে।’

শোভাযাত্রায় শিশু হেমাটোলোজি অনকোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এটিএম আতিকুর রহমান, অধ্যাপক ডা. ইয়াকুব জামাল, অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ারুল করিম, অধ্যাপক ডা. মো. গোলাম হাফিজ,  ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগের  চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল ইসলাম, শিশু নেফ্রোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফোরোজা বেগম, শিশু নিউরোলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার কুণ্ডুসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্ট, নার্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।