স্বতন্ত্র পরিদফতর গঠন ও ডিপ্লোমাধারীদের দশম গ্রেড (দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড) পদমর্যাদা প্রদানসহ ৬টি দাবি জানিয়েছে মেডিক্যাল টেকনোলজি ও ফার্মেসির শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী টেকনোলজিস্টদের পদায়ন করার আহ্বান জানান তারা।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী মেডিক্যাল টেকনোলজি ও ফার্মেসি সংগ্রাম পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী ১ জন চিকিৎসকের বিপরীতে ৩ জন নার্স ও ৫ জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট থাকা প্রয়োজন। দীর্ঘ ১৪ বছরেরও বেশি সময় প্রশাসনিক জটিলতায় মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সরকারি চাকরিতে কর্মরত মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের সংখ্যা মাত্র ৪ হাজার ১০৬ জন এবং মোট পদের সংখ্যা ৫ হাজার ৯৭৫টি।
তিনি বলেন, চিকিৎসক ও নার্সের বিদ্যমান সংখ্যার অনুপাত যেটি হওয়ার কথা ছিল ৮০ হাজারেরও বেশি। নিয়োগ জটিলতা শেষ হয়ে ২০২৩ সালের ১ আগস্ট সৃষ্ট নতুন পদে ৮৮৯ জনকে নিয়োগ দেয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ— যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই নগণ্য। দীর্ঘদিন নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় একটি বৃহৎ অংশের সরকারি চাকরিতে আবেদন বয়সসীমা পার হয়ে গেছে। নিজস্ব কোনও দফতর না থাকায় এ দক্ষ অথচ বেকার জনগোষ্ঠী এক প্রকার হতাশাগ্রস্ত জীবনযাপন করছেন।
এই খাতে বৈষম্য তুলে ধরে তিনি বলেন, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পেশাজীবীদের পেশাগত লক্ষ্য বাস্তবায়ন, বদলি, পদোন্নতি, উচ্চ শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, সমন্বয়ের জন্য কোনও স্বতন্ত্র উইং কিংবা অধিদফতর নেই।
এসময় ৬ দাবি তুলে ধরেন সদস্য সচিব জীবন ইসলাম। দাবিগুলো হলো— স্বতন্ত্র পরিদফতর গঠন করতে হবে। ডিপ্লোমাধারীদের দশম গ্রেড (দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড) পদমর্যাদা প্রদান করে ডব্লিউএইচও এর আনুপাতিক হারে পদ সৃষ্টি করে দ্রুত নিয়োগ করতে হবে ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২০১৩ সালের স্থগিতকৃত নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের নবম গ্রেডের পদ সৃষ্টি পূর্বক চাকরিজীবীদের আনুপাতিক হারে পদোন্নতির নিয়ম বহাল রেখে স্ট্যান্ডার্ড সেট আপ নিয়োগবিধি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঢাকা আইএইচটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করে একটা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব আইএইচটি-তে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট শিক্ষকদের স্বতন্ত্র ক্যারিয়ার প্ল্যান গঠন করে বিদ্যমান নিয়োগ বিধি ও অসঙ্গতিপূর্ণ গ্রেড সংশোধন করতে হবে। মেডিক্যাল টেকনোলজি কাউন্সিল ও ডিপ্লোমা মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ড গঠন এবং প্রাইভেট সার্ভিস নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। বি ফার্মসহ সব অনুষদের বিএসসি ও এমএসসি কোর্স চালু করা এবং স্কলারশিপসহ প্রশিক্ষণ ভাতা চালু করতে হবে।
এসময় তারা চারদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর মধ্যে আছে – আগামী ২০ অক্টোবর সব আইএইচটিগুলোতে মানববন্ধন এবং অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান। ২১ অক্টোবর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাব এবং সব জেলা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন। ২২ অক্টোবর সব জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন এবং স্মারকলিপি প্রদান। ২৪ অক্টোবর সব জেলার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ।