বিষয়টি মাথায় রেখে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ৫০০ শয্যার এ ইনস্টিটিউট হবে পোড়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথিবীর অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান।
বুধবার সকাল সাড়ে দশটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। গত বছরের ২৪ নভেম্বর একনেক সভায় এই বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রকল্প অনুমোদন পায়। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, ৬ লাখ পোড়া মানুষের চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ সার্জন রয়েছেন মাত্র ৫২ জন। ইনস্টিটিউট হলে শয্যার পাশাপাশি চিকিৎসকের সংখ্যাও বাড়বে। এতে থাকবে ১০০টি কেবিন, ৬০ বেডের হাইডেফিসিয়েন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), ৪০ বেডের আইসিইউ, ১২টি অপারেশন থিয়েটার এবং পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডসহ সব ধরনের পরীক্ষার অত্যাধুনিক ব্যবস্থা।
মঙ্গলবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের তত্ত্বাবধানে পুরোদমে কাজ এগিয়ে চলেছে। কথা বলে জানা গেল, প্রায় দেড় হাজার মানুষের বসার জায়গা করে প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরদিন থেকেই এর কাজ শুরু হবে।
কাগজপত্র থেকে জানা যায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৫০০ বেডের হাসপাতালের এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। পুরান ঢাকার চাঁনখার পুলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাশেই নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। প্রকল্পটির তত্ত্বাবধানে থাকছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর।
জানা গেল, প্রায় ২ একর জমিতে ১৭তলার এই বার্ন ইনস্টিটিউটে থাকবে হেলিপ্যাড। বাংলাদেশের সরকারি কোনও হাসপাতালে এটিই হবে প্রথম হেলিপ্যাড। ভবনের প্রথম দুইতলা হবে বেজমেন্ট আর বাকি ১৫তলা থাকবে ইনস্টিটিউটের অন্যান্য বিভাগের জন্য। ভবনের একদিকে থাকবে বার্ন অন্যদিকে থাকবে প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। আরেকটি ব্লকে থাকবে অ্যাকাডেমিক ভবন। বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির অত্যাধুনিক চিকিৎসা এখানে দেওয়া হবে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট জরুরি বিভাগ হিসেবে চালু রাখা হবে।
বার্ন ইনস্টিটিউটের বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম বলেন, এই ইনস্টিটিউট যতো দ্রুত হবে মানুষের দুর্ভোগ ততো কমবে। এখান থেকে চিকিৎসক তৈরি করে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হলে মানুষ ভালো চিকিৎসা পাবে।
প্লাস্টিক সার্জারির বিষয়ে ডা. সেন বলেন, আমাদের দেশে প্রতিবছর প্রায় ৬ হাজার ঠোঁটকাটা শিশুর জন্ম হয়। এই সমস্যার সমাধানের জন্য প্রশিক্ষিত চিকিৎসক দরকার। এখানে এর জন্য একটি ট্রেনিং সেন্টার করা হবে। চিকিৎসক ও নার্সরা প্রশিক্ষণ নিয়ে ওইসব শিশুদের বিশেষ চিকিৎসা দেবেন। এ ধরনের বিভিন্ন কার্যক্রম থাকবে।
বর্তমান প্রজন্মের চিকিৎসকরা অনেক বেশি ডেডিকেটেড জানিয়ে ডা. সেন জানান, এখানে শিক্ষা সুযোগ থাকবে বেশি। ছেলেমেয়েরা এখানে পড়তে আসবে। তারা যখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে, তখন আর দূর দূরান্ত থেকে রোগীদের ঢাকা মেডিক্যালে ছুটে আসতে হবে না।
/এজে/