সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে তিন পরামর্শ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রোগী শনাক্ত করে তাদের চিকিৎসার আওতায় আনা ও আইসোলেশনে রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা  এবং সবাইকে টিকার আওতায় আনতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ও মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন।

সোমবার (১০ মে) দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ আয়োজিত ‘করোনাভাইরাস-সহিষ্ণু গ্রাম’ শীর্ষক এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘হাঙ্গার প্রজেক্ট স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে যে সাস্থ্যবার্তা দিচ্ছে, এগুলো খুবই কার্যকর। করোনা নিয়ন্ত্রণে এই তিনটি উপায়ের কথা বলে তিনি জানান, সেই সঙ্গে এসব কাজে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

আলোচনাটি পরিচালনা করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্টের গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. বদিউল আলম মজুমদার।

তিনি জানান, দি হাঙ্গার প্রজেক্টের ‘করোনাভাইরাস-সহিষ্ণু গ্রাম’ গড়ার এই উদ্যোগ নেওয়া হয় গত বছরের এপ্রিলে। এটি একটি স্বেচ্ছাব্রতী পরিচালিত উদ্যোগ। স্বেচ্ছাব্রতীরা চারটি ধাপে এই উদ্যোগ পরিচালনা করছেন। প্রথম ধাপে তারা কমিউনিটি মোবিলাইজেশন কমিটি গঠন করার মাধ্যমে কাজ শুরু করেন, দ্বিতীয় ধাপে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও আচরণগত পরিবর্তন আনার জন্য বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেন, তৃতীয় ধাপে আক্রান্তদের স্বাস্থ্যসেবা পেতে সহায়তা করেন এবং চতুর্থ ধাপে স্বেচ্ছাব্রতীরা বিপন্ন মানুষদের বিভিন্নভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

আলোচনা সভায় জানানো হয়, বর্তমানে প্রায় এক হাজার ২০০ গ্রামে ১২৯টি ইউনিয়ন কমিটির মাধ্যমে এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সেখানে ৫৯৬টি গ্রামের ১৮ হাজার ৬৮৬ জনকে পরীক্ষা করানোর পর দুই হাজার ৩০২ জন শনাক্ত হন। তাদের মধ্যে এক হাজার ৬১৯ জনকে নিজেদের ঘরে এবং বাকি ৯২ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলোশনে পাঠানো হয়।

তাদের মধ্যে এক হাজার ৯৯৭ জন এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন।

হাঙ্গার প্রজেক্টের এই সক্ষমতাকে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কাজে লাগানো যাবে মন্তব্য করে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা কোনদিক দিয়ে আসছে সেদিকে নজর দিতে হবে, সেদিকে নজর দিতে গেলে শহরে নজর দিতে হবে। হাঙ্গার প্রজেক্টের এই কার্যক্রম যদি শহরেও করা যায়, তাহলে সোর্স নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘জনগণকে সম্পৃক্ত না করে শুধু প্রশাসনিক আদেশ দিয়ে কোনও সুফল বয়ে আনবে না। এর চেয়ে হাঙ্গার প্রজেক্টের উদ্যোগটি অনেক বেশি কার্যকরী। এই উদ্যোগকে আরও বেশি লোকবল এবং সুযোগ-সুবিধা দিতে পারলে এটি আরও বেশি সফল হবে।’