বাংলাদেশি ইলিশ নেবেন পাইলট, এয়ার ইন্ডিয়ার ঢাকা-কলকাতা ফ্লাইট বিলম্ব!

এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট (ছবি: আকবর আলি মাস্তান)বাংলাদেশের ইলিশের স্বাদের তুলনা হয় না। তাই আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ মাছ সঙ্গে নিতে এয়ার ইন্ডিয়ার ঢাকা-কলকাতা রুটের একটি ফ্লাইট প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছেন পাইলট! ঘটনাটি কয়েকদিন আগের।

জানা গেছে, গত ৮ আগস্ট ঢাকা-কলকাতা রুটে এয়ার ইন্ডিয়ার এআই২২৯ ফ্লাইটে ৫৪ জন যাত্রী রাত সোয়া ৯টার মধ্যে উঠেছিলেন। কথা ছিল রাত ৯টা ২৫ মিনিটে বিমানটি ছেড়ে যাবে। কিন্তু এয়ারবাস এ৩১৯ আকাশযানটি একচুলও নড়েনি। ফ্লাইট বিলম্ব হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে হট্টগোল বেঁধে যায়। কেউ কেউ অসন্তোষ প্রকাশ করেন, কেউবা বিরক্তি দেখিয়েছেন।

ওদিকে ককপিটে দুই পাইলটের মধ্যে একজনের সঙ্গে ঢাকায় এয়ারলাইনটির নিরাপত্তা কর্মকর্তার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হচ্ছিল। পাইলটের চাহিদা অনুযায়ী বরফে আচ্ছাদিত ইলিশ মাছ এয়ারক্রাফটে নিতে চাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি ছিল ওই কর্মকর্তার। কারণ বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ রফতানি করা বেআইনি।

পাইলটের মধ্যে ঢাকা থেকে কলকাতায় ইলিশ চোরাচালানের অপচেষ্টা ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া ম্যানেজমেন্ট। একইসঙ্গে দেরিতে ফ্লাইট ছাড়ার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে পাইলটকে। যদিও ইলিশ চোরাচালানে পাইলটের সম্পৃক্ততা দেখছেন না এয়ারলাইনটির নিরাপত্তা কর্মকর্তা।

ইলিশজানা গেছে, ইলিশ মাছ না হয়ে অন্য কোনও পণ্য হলে ওই পাইলটকে তা নিতে হতো কার্গোতে। কারণ ভারতীয় আইন অনুযায়ী ফল, সবজি, কাচা মাছ ও লাইসেন্সহীন পোলট্রি আমদানি নিষিদ্ধ।

বেশি দেরি হয়ে যাওয়ায় নিরাপত্তা কর্মকর্তার চাপে ইলিশ মাছ ছাড়াই রওনা দিতে হয়েছে পাইলটকে। এরপর এয়ারক্রাফট রিলিজ সার্টিফিকেটে (এআরসি) স্বাক্ষর ছাড়াই উড়োজাহাজের দরজা বন্ধের নির্দেশ দেন ওই কর্মকর্তা। যেকোনও উড্ডয়নের আগে এটি হলো চূড়ান্ত ডকুমেন্টেশন। কিন্তু পরে ফ্লাইটের বিলম্ব হওয়ার কারণ জানতে পারে ঢাকা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে পাইলট আবারও দরজা খোলেন। এরপর নিশ্চিত করা হয় কোনও ইলিশ কিংবা নিষিদ্ধ পণ্য এয়ারক্রাফটে নেওয়া হয়নি। তারপর এআরসিতে সই করে তিনি ফিরে যান ককপিটে। শেষ পর্যন্ত রাত সাড়ে ১০টায় এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটটি ছেড়ে যায়।

সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস