বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমান ভ্রমণ রুটে এশিয়ার আধিপত্য

http_%2F%2Fcdn.cnn.com%2Fcnnnext%2Fdam%2Fassets%2F180913145736-worlds-busiest-flight-routes---generic-passenger-plane---pixabayযুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এভিয়েশন বাজার থাকতে পারে, কিন্তু যাত্রী পরিবহন ও চাহিদার দিক দিয়ে আকাশপথ শাসন করছে এশিয়া। নতুন এক সমীক্ষায় পৃথিবী গ্রহের ব্যস্ততম যাত্রীবাহী শিডিউল ফ্লাইটের রুটগুলো উঠে এসেছে। তালিকায় এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আধিপত্য লক্ষণীয়। ২০১৭ সালের শীর্ষ ৫০০টি রুটে যাত্রী ধারণক্ষমতা অনুযায়ী হিসাব করে এটি তৈরি করেছে ‘রুটস’ নামের যুক্তরাজ্য ভিত্তিক এভিয়েশন নেটওয়ার্ক ডেভেলপার।

তালিকায় শীর্ষে আছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের কিমপো বিমানবন্দর থেকে মনোরম জেজু দ্বীপে ৪৫০ কিলোমিটার ভ্রমণের রুট। দ্বীপটিকে বলা হয় ‘কোরিয়ার হাওয়াই’। ২০১৭ সালে এই অল্প দূরত্বের রুটে যাতায়াত করেছেন ১ কোটি ৩৪ লাখ ৬০ হাজার ৩০৬ জন যাত্রী। জনপ্রিয় এই রুটে প্রতিদিন প্রতি আট মিনিট পরপর ১৮০টি শিডিউল ফ্লাইট চলাচল করে।

সিউল কিমপো থেকে জেজু রুটের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিমানবন্দর থেকে সিডনি কিংসফোর্ড স্মিথ বিমানবন্দরের রুট। এই আকাশপথে গত বছর যাতায়াত করেছেন ৯০ লাখ ৯০ হাজার ৯৪১ জন।

যাত্রী সংখ্যার দিক দিয়ে শীর্ষ ১০০ ব্যস্ততম রুটের মধ্যে ৭০ শতাংশই এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের। এর মধ্যে বিশ্বের ব্যস্ততম গন্তব্যগুলোর মধ্যে অন্যতম জাপান। দেশটির অভ্যন্তরীণ তিনটি গন্তব্য আছে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিমান ভ্রমণ রুটের তালিকায়। এগুলো হলো— তিন নম্বরে থাকা সাপোরোর নিউ চাইতোস বিমানবন্দর থেকে টোকিও হানেদা বিমানবন্দর (৮৭ লাখ ২৬ হাজার ৫০২ জন), চার নম্বরে স্থান পাওয়া ফুকুওকা বিমানবন্দর থেকে টোকিও হানেদা (৭৮ লাখ ৬৪ হাজার যাত্রী) ও তালিকার ১০ নম্বরে জায়গা করে নেওয়া টোকিও হানেদা থেকে ওকিনাওয়ার নাহা বিমানবন্দর (৫২ লাখ ৬৯ হাজার ৪৮১ জন)।

সাত নম্বরে আছে ভিয়েতনামের হ্যানয়ে অবস্থিত নই বাই বিমানবন্দর থেকে হো চি মিন সিটির তান সোন নাত বিমানবন্দর। এই গন্তব্যে ২০১৭ সালে যাতায়াত করেছে ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮২৩ জন।

রুটসের ব্র্যান্ড পরিচালক স্টিভেন স্মল বলেছেন, ‘এই গবেষণা অনুযায়ী আগামী ২০ বছরে আকাশপথে সবচেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহনের চিত্র দেখা যাবে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে।’

ব্যস্ততম আন্তর্জাতিক রুটের তালিকায় শীর্ষে আছে হংকং ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর থেকে তাইওয়ানের তাইপেই তাইউয়েন বিমানবন্দর। গত বছর ৮০২ কিলোমিটারের এই ভ্রমণ রুটে চলাচল করেছেন ৬৭ লাখ ১৯ হাজার ৩০ জন।

একই তালিকায় ৯ নম্বরে স্থান পেয়েছে নিউ ইয়র্কের জন এফ. কেনেডি বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর। এই রুটে ২০১৭ সালে যাতায়াত করেছেন ২৯ লাখ ৭২ হাজার ৮১৭ জন। উত্তর আমেরিকায় সবচেয়ে ব্যস্ততম রুট হলো জন এফ. কেনেডি বিমানবন্দর থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

গবেষণায় আরও জানা গেছে, কোন রুটে যাত্রী সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এ তালিকায় শীর্ষে আছে থাইল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ রুট ব্যাংকক সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর থেকে চিয়াঙ মাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

জেজু দ্বীপশীর্ষ ১০ ব্যস্ততম অভ্যন্তরীণ রুট
১. সিউল কিমপো থেকে জেজু (১ কোটি ৩৪ লাখ ৬০ হাজার ৩০৬ জন)
২. মেলবোর্ন থেকে সিডনি কিংসফোর্ড স্মিথ (৯০ লাখ ৯০ হাজার ৯৪১ জন)
৩. সাপোরো থেকে টোকিও হানেদা (৮৭ লাখ ২৬ হাজার ৫০২ জন)
৪. ফুকুওকা থেকে টোকিও হানেদা (৭৮ লাখ ৬৪ হাজার যাত্রী)
৫. মুম্বাই থেকে দিল্লি (৭১ লাখ ২৯ হাজার ৯৪৩ জন)
৬. বেইজিং ক্যাপিটাল থেকে সাংহাই হোংকিয়াও (৬৮ লাখ ৩৩ হাজার ৬৮৪ জন)
৭. হ্যানয় থেকে হো চি মিন সিটি (৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮২৩ জন)
৮. হংকং থেকে তাইওয়ান তাইউয়েন (৬৭ লাখ ১৯ হাজার ৩০ জন)
৯. জাকার্তা থেকে জুয়ানদা সুরাবায়া (৫২ লাখ ৭১ হাজার ৩০৪ জন)
১০. টোকিও হানেদা থেকে ওকিনাওয়া (৫২ লাখ ৬৯ হাজার ৪৮১ জন)

Hong Kong International Airport, pictured, to Taipei Taoyuan Airport was the busiest international routeশীর্ষ ১০ ব্যস্ততম আন্তর্জাতিক রুট
১. হংকং থেকে তাইওয়ান তাইউয়েন (৬৭ লাখ ১৯ হাজার ৩০ জন)
২. জাকার্তা থেকে সিঙ্গাপুর চেঙ্গি (৪৮ লাখ ১০ হাজার ৬০২ জন)
৩. হংকং থেকে সাংহাই পুডং (৪১ লাখ ৬২ হাজার ৩৪৭ জন)
৪. কুয়ালালামপুর থেকে সিঙ্গাপুর চেঙ্গি (৪১ লাখ ৮ হাজার ৮২৪ জন)
৫. ব্যাংকক সুবর্ণভূমি থেকে হংকং (৩৪ লাখ ৩৮ হাজার ৬২৮ জন)
৬. দুবাই থেকে লন্ডন হিথ্রো (৩২ লাখ ১০ হাজার ১২১ জন)
৭. হংকং থেকে সিউল ইনচিওন (৩১ লাখ ৯৮ হাজার ১৩২ জন)
৮. হংকং থেকে সিঙ্গাপুর চেঙ্গি (৩১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৮৪ জন)
৯. নিউ ইয়র্ক জেএফকে থেকে লন্ডন হিথ্রো (২৯ লাখ ৭২ হাজার ৮১৭ জন)
১০. হংকং থেকে বেইজিং ক্যাপিটাল (২৯ লাখ ৬২ হাজার ৭০৭ জন)

যে ১০টি আন্তর্জাতিক রুটে দ্রুত বাড়ছে যাত্রী সংখ্যা
১. ব্যাংকক সুবর্ণভূমি থেকে চিয়াঙ মাই (৩৬ শতাংশ)
২. সিউল ইনচিওন থেকে কানসাই ইন্টারন্যাশনাল (৩০ দশমিক ৩ শতাংশ)
৩. জাকার্তা থেকে কুয়ালালামপুর (২৯ দশমিক ৪ শতাংশ)
৪. দিল্লি থেকে পুনে (২০ দশমিক ৬ শতাংশ)
৫. চেংডু থেকে শেনজেন বাওয়ান (১৬ দশমিক ৮ শতাংশ)
৬. হংকং থেকে সাংহাই পুডং (১৫ দশমিক ৫ শতাংশ)
৭. ব্যাংকক সুবর্ণভূমি থেকে ফুকেট (১৪ দশমিক ৯ শতাংশ)
৮. জেদ্দা থেকে রিয়াদ কিং খালিদ (১৩ দশমিক ৯ শতাংশ)
৯. জাকার্তা থেকে কুয়ালানামু (১৩ দশমিক ৯ শতাংশ)
১০. কলকাতা থেকে দিল্লি (১৩ দশমিক ৪ শতাংশ)

সূত্র: সিএনএন