যাত্রীর সন্তানকে বুকের দুধ দিয়ে প্রশংসিত বিমানবালা

শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন প্যাট্রিসিয়া অরগ্যানোঅভূতপূর্ব ঘটনা! ফিলিপাইন এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে একজন যাত্রীর সন্তানকে বুকের দুধ পান করিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন বিমানবালা প্যাট্রিশা অরগ্যানো। ঘটনাটি গত ৬ নভেম্বরের। এর পরদিন ফেসবুক পোস্টে এসব তথ্য জানান ২৪ বছর বয়সী এই ফ্লাইট অ্যাটেনড্যান্ট। সেটি এখন ভাইরাল।

স্ট্যাটাসের শুরুতেই প্যাট্রিশা অরগ্যানো লিখেছেন, ‘ফ্লাইটের অভ্যন্তরে অচেনা একজন মায়ের সন্তানকে বুকের দুধ দিয়েছি।’ এরপর পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।

অরগ্যানো জানান, ফিলিপাইন এয়ারলাইনসের বিমানটি উড্ডয়নের পর একটি বাচ্চার কান্না শুনতে পান তিনি। তার কথায়, ‘সে এমনভাবে কাঁদছিল, খুব মায়া হলো। নিশ্চিত ছিলাম, ওর অনেক ক্ষুধা পেয়েছিল। বাচ্চাটার কান্না দেখে সহযোগিতা করার ইচ্ছে জন্মালো মনে। তাই তার মায়ের কাছে গিয়ে সব ঠিক আছে কিনা জানতে চাইলাম। বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য বলি। মায়ের চোখেও তখন জল।’

প্যাট্রিশা অরগ্যানোর ফেসবুক স্ট্যাটাসকন্যা শিশুটির মা তখন জানান, তার বানিয়ে আনা দুধ শেষ হয়ে গেছে। শুনে খুব খারাপ লাগলো প্যাট্রিশার। কারণ বিমানের ভেতরে শিশুদের উপযোগী কোনও বানানো দুধ ছিল না। অন্য যাত্রীরা তখন ওই শিশুর দিকে তাকিয়ে রইলো। তিনি লিখেছেন, ‘একটু ভেবে মনে হলো, এখন একমাত্র উপায় আমার নিজের বুকের দুধ দেওয়া। বাচ্চার মায়ের কাছে সেই ইচ্ছে প্রকাশ করলাম।’

ফিলিপাইন এয়ারলাইনসের ফ্লাইটমা রাজি হওয়ার পর আকাশযানের সংরক্ষিত স্থানে গিয়ে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান প্যাট্রিশা অরগ্যানো। ফ্লাইটের লাইন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর শেরিল ভিলাফ্লরও তখন সেখানে ছিলেন।

ফেসবুক পোস্টে অরগ্যানো যোগ করেন, ‘দুধ পেয়ে সন্তানের কান্না থামতেই মায়ের চোখে স্বস্তি দেখতে পেলাম। মেয়েটা না ঘুমানো পর্যন্ত তাকে বুকের দুধ দিয়েছি। ঘুমিয়ে পড়ার পর কোলে করে আসনে দিয়ে এসেছি। চলে আসার সময় তার মা আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ দেন আমাকে।’

শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় তোলা একটি ছবি ফেসবুক পোস্টে যুক্ত করেছেন প্যাট্রিশা অরগ্যানো। তবে মেয়েটির পরিবারের গোপনীয়তার কথা ভেবে এটি সম্পাদনা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এতে লাইক পড়েছে দেড় লাখের পাশাপাশি। কমেন্ট করা হয়েছে সাড়ে ৭ হাজারের বেশি। এটি শেয়ার হয়েছে ৩৪ হাজার বারেরও বেশি।

প্যাট্রিশা অরগ্যানোর কোলে তার সন্তান (ছবি: ফেসবুক)স্ট্যাটাসটি স্বামী অরসন অরগ্যানোকে ট্যাগ করেছেন প্যাট্রিশা। তাদের সংসারে ৯ মাস বয়সী একটি মেয়ে আছে। মার্কিন ওয়েব সেবা প্রদানকারী সংস্থা ইয়াহুকে তিনি বলেন, ‘আমি একজন মা। তাই শিশুদের কোন কান্না ক্ষুধার, কোনটা ঘুমানোর তা বুঝতে পারি।’
ফিলিপাইন এয়ারলাইনসের এই ফ্লাইটের মাধ্যমে কেবিন ক্রু ইভালুয়েটর হিসেবে পদোন্নতি হয়েছে প্যাট্রিশার। 
সূত্র: ইউএসএ টুডে