বিশ্বের নিরাপদ এয়ারলাইনসের তালিকায় বিমান বাংলাদেশ

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী)আকাশপথে কোন বিমান সংস্থা নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ সেই রেটিং প্রতি বছর করে থাকে এয়ারলাইন রেটিংস ডটকম। এ বছর যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার দিক দিয়ে পাঁচতারকা পেয়ে বিশ্বের সেফটি এয়ারলাইনস তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। রবিবার (২০ জানুয়ারি) এই তথ্য জানা গেছে। 

বিশ্বের ৪০৫টি বিমান সংস্থার তথ্য ব্যাপকভাবে বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিরাপদ এয়ারলাইনসের তালিকা তৈরি করেছে এয়ারলাইন রেটিংস। এক্ষেত্রে ১২টি পৃথক মানদণ্ড ব্যবহার হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সরকারি, বিশ্ব এভিয়েশন গভর্নিং বডি ও এভিয়েশন সংশ্লিষ্ট শীর্ষ সংগঠনগুলোর অডিট। এছাড়া প্রতিটি এয়ারলাইনের উড়োজাহাজের বয়স ও লাভজনকের হারের সঙ্গে দুর্ঘটনায় পড়া ও গুরুতর ঘটনার রেকর্ড ঘেঁটে দেখা হয়।
এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই স্বীকৃতি বিমানের জন্য বড় অর্জন। বিমান সবসময় যাত্রীদের নিরাপত্তায় কাজ করে, এই স্বীকৃতি তারই বহিঃপ্রকাশ। বিমান সবসময় নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। এজন্য বিমানে করপোরেট সেফটি কোয়ালিটি বিভাগ চালুর পাশাপাশি আইকাও’র নির্দেশনা অনুযায়ী সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’

আইয়াটা অপারেশনাল সেফটি অডিট (আইওএসএ) সনদপ্রাপ্ত হওয়ায় তিন তারকা পেয়েছে বিমান। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) কালো তালিকাভুক্ত না হওয়া পূর্ণ তারকা পেয়েছে বাংলাদেশের পতাকাবাহী এই বিমান সংস্থা। গত ১০ বছরে দুর্ঘটনা এড়াতে পারায় ও কোনও আরোহীর মৃত্যু না হওয়ায় আরেকটি পূর্ণ তারকা পেয়েছে বিমান।
শাকিল মেরাজ আরও বলেন, ‘আইয়াটা অপারেশনাল সেফটি অডিটে টানা ছয়বার উত্তীর্ণ হয়েছে বিমান। নিয়মিত ফ্লাইট ডাটা মনিটরিং করে আকাশপথের ঝুঁকিগুলো সমধানে কাজ করে পাইলটদের সর্তক হতে বলা হয়। শুধু তাই নয়, সারাবিশ্বে পাইলটদের কী কী ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হয় সেসব তথ্য সংগ্রহ করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অন্য এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ডাটা পাওয়ার জন্য আইয়াটার সঙ্গে একটি চুক্তিও করা হয়েছে।’
তবে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) অনুমোদন না থাকা ও আইকাওয়ের আটটি নিরাপত্তা প্যারামিটার সম্পন্ন না করায় দুটি তারকা পায়নি বিমান।

এফএএ অনুমোদন না থাকা ও আইকাওয়ের নিরাপত্তার প্যারামিটার সম্পন্ন না করা প্রসঙ্গে শাকিল মেরাজ বলেন, ‘এ দুটি বিষয়ে এয়ারলাইনস হিসেবে বিমানের একার কিছু করার নেই। দেশের এভিয়েশন অথরিটি ও এয়ারলাইনসের যৌথ পদক্ষেপ থাকতে হয়। সিভিল এভিয়েশন অথরিটির সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে বিমান।’

বিমানের ইকোনমি আসনের যাত্রী ২০ কেজি আর বিজনেস ক্লাসের যাত্রীরা ৩০ কেজি মালামাল বহন করতে পারেন। তাদের জন্য প্রতিটি ফ্লাইটে সৌজন্য হিসেবে থাকে খাবার।

১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বিমান। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর উপহার দেওয়া ডিসি-৩ উড়োজাহাজ দিয়ে প্রথম কার্যক্রম শুরু হয়। বিমানের এয়ারলাইন কোড ‘বিজি’। এর উড়োজাহাজগুলো হলো কিউ-৪০০, ৭৩৭-৮০০ ও ৭৭৭-৩০০ইআর, ৭৮৭-৮।