চাঙ্গি বিমানবন্দরে ১০ হাজার ৪৮০ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ঝরনা ও বনাঞ্চল

জুয়েল কমপ্লেক্সের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকছে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম ইনডোর ঝরনাসিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে তৈরি হলো বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ইনডোর ঝরনা ও বনাঞ্চল। ১ লাখ ৩৭ হাজার বর্গমিটার আয়তনের কমপ্লেক্সটির নাম রাখা হয়েছে জুয়েল চাঙ্গি বিমানবন্দর। আগামী ১৭ এপ্রিল দর্শনার্থীদের জন্য এর দরজা খুলে দেওয়া হবে। ফলে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে যারা নিয়মিত ভ্রমণ করেন তাদের অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে।

পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পর দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এটাকে বলা হচ্ছে, বিশ্বমানের বহুমাত্রিক পর্যটন আকর্ষণ। এর পেছনে ব্যয়ের পরিমাণ ১২৫ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ হাজার ৪৮০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এটি ডিজাইন করেছেন বিশ্বখ্যাত স্থপতি মোশে সাফদি।

ঝরনার চারপাশে থাকবে রেস্তোরাঁ ও ২৮০টি বিভিন্ন পণ্যের দোকানকমপ্লেক্সের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকছে ১৩০ ফুট (৪০ মিটার) উঁচু ‘রেইন ভরটেক্স’। এটাই বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ইনডোর ঝরনা। রাতে এটি আলোকিত হয়ে উঠবে নানান রঙের বাতিতে। এছাড়া থাকবে সাউন্ড শো।

জুয়েল কমপ্লেক্সের সুবাদে দ্রুত চেক-ইনের সুবিধা পাবেন যাত্রীরাচাঙ্গি বিমানবন্দরের ১, ২ ও ৩ নম্বর টার্মিনালকে সংযুক্ত করেছে ভবনটি। এর সুবাদে টিকিট, বোর্ডিং পাস ও ব্যাগেজ স্টোরেজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে যাত্রীরা তাদের ফ্লাইটে দ্রুত চেক-ইনের সুবিধা পাবেন। জুয়েলে ২৮০টি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্যের দোকানে কেনাকাটা করা যাবে। পর্যটকদের থাকার জন্য রয়েছে ১৩০ কক্ষের ‘ইওটেলেয়ার সিঙ্গাপুর চাঙ্গি বিমানবন্দর হোটেল’।

শূন্য থেকে জুয়েল কমপ্লেক্সজুয়েল কমপ্লেক্স পুরোটাই স্টিলের ফ্রেমে কাচ দিয়ে ঘেরা। এটি মোট ১০ তলা। এর মধ্যে চার তলা জুড়ে সতেজ ফরেস্ট ভ্যালিতে রয়েছে হাজারও গাছ আর বিভিন্ন উদ্ভিদ। সিঙ্গাপুরে সবচেয়ে বৃহত্তম ইনডোর গাছগাছালির সংগ্রহশালার মধ্যে এটি অন্যতম। সেখানে ল্যান্ডস্কেপ হিসেবে রয়েছে ২ লাখ ৩৫ হাজার বর্গফুট জায়গা।

ক্যানোপি পার্কএকেবারে ওপরের তলায় ১৪ হাজার বর্গমিটারের ক্যানোপি পার্কে মিলবে খেলার মাঠ, বাগান, হাঁটাচলার পথ ও রেস্তোরাঁ।
স্কাই নেটসপার্কটির অন্যতম তিন আকর্ষণ হলো স্কাই নেটস (২৫০ মিটারের বাউন্সিং নেট ও ৫০ মিটারের ওয়াকিং নেট), ক্যানোপি মেজেস ও ডিসকভারি স্লাইডস। এর মধ্যে দুটি মেজ ডিজাইন করেছেন বিখ্যাত ডিজাইনার আড্রিয়ান ফিশার। ২৩ মিটার উঁচুতে ৫০ মিটার দীর্ঘ ক্যানোপি ব্রিজ থেকে রেইন ভরটেক্স ও ফরেস্ট ভ্যালি দেখতে দারুণ লাগবে। এ বছরের মাঝামাঝি এটি চালু হবে।

গোলকধাঁধাচাঙ্গি এয়ারপোর্ট গ্রুপের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি (করপোরেট ও মার্কেটিং কমিউনিকেশনস) আইভ্যান টান বলেন, ‘জুয়েল হয়ে উঠবে ভ্রমণপ্রেমীদের অতুলনীয় গন্তব্য। বিশ্বের আর কোথাও এমন কিছু নেই। সতেজ সবুজ গাছপালা, মনোরম ঝরনা, সাশ্রয়ী মূল্যে কেনাকাটার দারুণ সুযোগ ও পারিবারিক খেলাধুলার আকর্ষণের সংমিশ্রণ রয়েছে এতে। ভ্রমণ ও অবকাশযাপনে দর্শনার্থীদের নতুনমাত্রা এনে দিতে পারছি বলে আমরা রোমাঞ্চিত।’

জুয়েল কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয়ের পরিমাণ ১০ হাজার ৪৮০ কোটি ৭৫ লাখ টাকাবিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরগুলোর তালিকায় চাঙ্গি বিমানবন্দর সপ্তম। এর চারটি টার্মিনালে ২০১৮ সালে রেকর্ডসংখ্যক ৬ কোটি ৫৬ লাখ যাত্রী আসা-যাওয়া করেছে।

সূত্র: মেইল অনলাইন, সিএনএন