বিশ্বের বিভিন্ন বিমান সংস্থা ফ্লাইট সেবায় পরিবর্তন আনছে কিংবা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করছে। এ কারণে তারা কর্মীদের অবৈতনিক ছুটি নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
কয়েকদিন আগে তার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট (টিকে৫৪) সিঙ্গাপুর থেকে ফাঁকা এসেছে ইস্তানবুলে। কারণ একই ফ্লাইটের একজন যাত্রীর শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে।
কোভিড-১৯ বা নভেল করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি চীনের উহান শহরে। এটি এখন ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি ও ইরানসহ ৮০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতির আলোকে অনেক বিমান সংস্থা চীনে ধারাবাহিকভাবে ফ্লাইট স্থগিত করে যাচ্ছে। চীনে যেসব বিমান সংস্থা ফ্লাইট বাতিল করেছে সেই তালিকা রইলো।
* ভারতের এয়ার ইন্ডিয়া আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত হংকং ও সাংহাই ফ্লাইট স্থগিত রাখছে। এর মধ্যে হংকং হলো চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল। আর সাংহাই চীনের চার পৌরসভার একটি।
* আমেরিকান এয়ারলাইনস আগামী ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত চীন ও হংকংয়ে ফ্লাইট সেবা স্থগিত করেছে।
* এয়ার ফ্রান্স গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে চীনে ফ্লাইট স্থগিত রেখেছে। মার্চ মাস শেষে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত ফ্রান্সের পতাকাবাহী এই বিমান সংস্থা।
* এয়ার সিউল গত ২৮ জানুয়ারি থেকে চীনে ফ্লাইট স্থগিত করেছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার এই বাজেট এয়ারলাইনস।
* এয়ার তানজানিয়া গত ফেব্রুয়ারিতে চীনে চার্টার সেবা চালুর পরিকল্পনা করেছিল। করোনা আতঙ্কে তা অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার পতাকাবাহী এই সংস্থা।
* মরিশাসের পতাকাবাহী সংস্থা এয়ার মরিশাস চীন ও হংকংয়ে সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
* যুক্তরাজ্যের পতাকাবাহী ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত চীনে সব ফ্লাইট স্থগিত রেখেছে।
* যুক্তরাষ্ট্রের ডেল্টা এয়ারলাইনস গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চীনে সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
* ইজিপ্টএয়ার গত ১ ফেব্রুয়ারি চীনে সব ফ্লাইট স্থগিত করে। তবে ২০ ফেব্রুয়ারি মিসরের পতাকাবাহী এই সংস্থা জানায়, মার্চে চীনে আসা-যাওয়ার কিছু ফ্লাইট চালু করা হবে।
* এল আল ইসরায়েল এয়ারলাইনস আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত হংকংয়ে ফ্লাইট স্থগিত করেছে। এছাড়া থাইল্যান্ডের ব্যাংককে দৈনন্দিন ফ্লাইট সংখ্যা কমিয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে গত ৩০ জানুয়ারি থেকে আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত বেইজিংয়ে ফ্লাইট সেবা বন্ধ রাখছে ইসরায়েলের পতাকাবাহী এই সংস্থা।
* স্পেনের পতাকাবাহী ইবেরিয়া এয়ারলাইনস মাদ্রিদ থেকে সাংহাই রুটে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ফ্লাইট স্থগিত করে। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে থাকবে তারা।
* দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম ও বৃহত্তম বাজেট এয়ারলাইনস জেজুএয়ার ১ মার্চ থেকে চীনে সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
* কেনিয়া এয়ারওয়েজ গত ৩১ জানুয়ারি থেকে চীনে সব ফ্লাইট স্থগিত করে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে বলে জানায় কেনিয়ার পতাকাবাহী এই সংস্থা।
* কেএলএম রয়েল ডাচ এয়ারলাইনস গত ২ মার্চ থেকে চীনের হাংজো, চাংদু ও জিয়ামেনে ফ্লাইট স্থগিত করে। আগামী ৩ মে পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে থাকবে তারা। নেদারল্যান্ডসের পতাকাবাহী এই সংস্থার আশা, আগামী ২৯ মার্চ বেইজিং ও সাংহাইতে ফের ফ্লাইট শুরু করা যাবে।
* ইন্দোনেশিয়ার বাজেট এয়ারলাইনস লায়ন এয়ার ফেব্রুয়ারিতে চীনে কোনও ফ্লাইট সেবা দেয়নি।
* পোল্যান্ডের পতাকাবাহী সংস্থা এলওটি চীনে সব ফ্লাইট স্থগিতের সময়সীমা আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত বর্ধিত করেছে।
* জার্মানির পতাকাবাহী সংস্থা লুফথানসা আগামী ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত চীনের সব ফ্লাইট বাতিল করে দিয়েছে।
* ওমান এয়ার গত ২ ফেব্রুয়ারি চীনের সব ফ্লাইট স্থগিত করে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এমন সিদ্ধান্তে থাকবে ওমানের এই রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা।
* কাতারের পতাকাবাহী সংস্থা কাতার এয়ারওয়েজ গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য চীনে সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
* রুয়ান্ডাএয়ার গত ৩১ জানুয়ারি থেকে চীনে কোনও ফ্লাইট সেবা দিচ্ছে না। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এমন সিদ্ধান্তে থাকবে রুয়ান্ডার পতাকাবাহী এই সংস্থা।
* সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সাউদিয়া গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে চীনে কোনও ফ্লাইট পাঠাচ্ছে না।
* সিঙ্গাপুরের বাজেট এয়ারলাইনস স্কুট গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য চীনে সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
* আমেরিকার ইউনাইটেড এয়ারলাইনস গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত হংকংয়ে সব ফ্লাইট স্থগিত ঘোষণা করেছে।
* ভিয়েতনামের পতাকাবাহী সংস্থা ভিয়েতনাম এয়ারলাইনস ও দেশটির বাজেট এয়ারলাইনস ভিয়েতজেট গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চীন, হংকং ও ম্যাকাউয়ে সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, সিএনএন