আগামী ২৫ মে থেকে কাতার এয়ারওয়েজের সব ফ্লাইটে প্রত্যেক যাত্রীর মুখ ঢেকে রাখা কিংবা মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। ভ্রমণকারীরা নিজেদের সঙ্গে মানায় ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, মুখ ঢাকার এমন উপকরণ ব্যবহার করলেই চলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী বিমান ভ্রমণের সময় যাত্রীদের মুখ ঢেকে রাখা বা মাস্ক ব্যবহারের জন্য জোর দিচ্ছে কাতার এয়ারওয়েজসহ বিশ্বের অনেক এয়ারলাইনস। কাতারের উড়োজাহাজে মাস্ক ব্যবহার না করলে ৫৫ হাজার ডলার (৪৭ লাখ টাকা) জরিমানাসহ সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
কাতার এয়ারওয়েজ গ্রুপের প্রধান নির্বাহী আকবর আল বাকের বলেন, ‘যাত্রী ও কেবিন ক্রুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে এবং করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে আমাদের উড়োজাহাজে অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছি। বৈশ্বিক দুর্যোগের মধ্যে মানুষ যেন নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে তা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখছি। সুরক্ষাই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার।’
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ইন-ফ্লাইট সেবায় পরিবর্তন এনেছে কাতার এয়ারওয়েজ। বিজনেস ক্লাস কিউস্যুটের যাত্রীদের খাবার দিতে টেবিলের পরিবর্তে ব্যবহার করা হবে ট্রে। খাওয়ার জন্য ব্যবহৃত সব জিনিস ডিটারজেন্ট ও বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন সংশ্লিষ্টরা। যাত্রী ও কেবিন ক্রুদের মধ্যে সংস্পর্শ এড়াতে কাপড়ে মুড়িয়ে দেওয়া হবে এসব উপকরণ।
সংস্পর্শ ও জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন কাতার এয়ারওয়েজের কেবিন ক্রুরা। ফ্লাইট উড্ডয়নের আগে ও অবতরণের পর যাত্রী ও কেবিন ক্রুদের থার্মাল স্ক্যানিং করা হচ্ছে। কারও মধ্যে করোনাভাইরাসের উপসর্গ ধরা পড়লে তাকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কাতার এয়ারওয়েজের স্বল্প দূরত্ব ও মাঝারি দূরত্বের ফ্লাইটে কেবিন ক্রুদের দুটি দল থাকছে। একটি দল বিদেশগামী ফ্লাইটে দায়িত্ব পালন করে। অন্যরা কাজ করেন ফিরতি পথে। দীর্ঘ দূরত্বের ফ্লাইটের ক্ষেত্রে কেবিন ক্রুদের অন্য দেশে রাতযাপন করতে হয়। তাই তারা কাতার এয়ারওয়েজ অনুমোদিত পরিবহনে চড়ে রুমে ঢুকে মানুষের সংস্পর্শ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলছেন।
কাতার এয়ারওয়েজ স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখছে। উড়োজাহাজ জীবাণুমুক্ত রাখতে আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সমিতি (আইএটিএ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুসরণ করা হচ্ছে। কাতারের হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জীবাণুনাশক রোবট স্থাপনে বিনিয়োগ করেছে এই সংস্থা।
বিশ্বের পরিবর্তনের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টদের ইউনিফর্ম ব্যাপক বদলেছে। নিত্যনতুন স্টাইল যুক্ত করায় এসব পোশাকে হালের ফ্যাশন ট্রেন্ড প্রতিফলিত হয়। কোভিড-১৯ সংকটে সেগুলোর ওপর জুড়ে বসছে সুরক্ষা ব্যবস্থা।
ফিলিপাইনস এয়ারলাইনস এবং এয়ারএশিয়া পিপিই অন্তর্ভুক্ত করে নতুন ইউনিফর্ম চালু করেছে। এবার কাতার এয়ারওয়েজ এই পদক্ষেপ নিলো। ফিলিপাইনস এয়ারলাইনসের কেবিন ক্রুদের পোশাক ডিজাইন করেছেন এডউইন ট্যান।
এয়ারএশিয়ার ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টদের নতুন ইউনিফর্ম সাজিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফিলিপিনো ডিজাইনার পুই কুইনোনস। তার মতে, সুরক্ষামূলক এসব উদ্যোগ নতুন ধরনের স্বাভাবিকতা।
তথ্যসূত্র: ডেইলি মেইল