আকাশপথে যাতায়াত করা ভ্রমণকারীদের কেউই প্রয়োজনের বাইরে অযথা বিমানবন্দরে সময় অপচয় করতে চান না। তবে এ বছর উদ্বোধনের তালিকায় থাকা আকাশযানের অবতরণ ও উড্ডয়ন আর যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ নতুন কয়েকটি জায়গা চিত্রটা বদলে দিতে পারে। এগুলোর সুবাদে বিমানবন্দর নিয়ে মানুষের ধারণা পৌঁছাবে নতুনমাত্রায়। ২০১৯ সালের তেমন কয়েকটি আকর্ষণীয় হাবের খবর জেনে নিন।
ইসরায়েলি মরুভূমিতে গত ২১ জানুয়ারি চালু হয়েছে মহাকাশযান ঢঙের এই ভবন। ইসরায়েলের প্রথম নভোচারী ইলান রামন ও তার ছেলে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর পাইলট আসাফ রামনের নামে এর নামকরণ হয়েছে।
শুরুর দিকে বছরে ২০ লাখ যাত্রী এই বিমানবন্দর দিয়ে যাওয়া-আসা করবেন।
জুয়েল চাঙ্গি এয়ারপোর্ট কমপ্লেক্স (সিঙ্গাপুর)
সিঙ্গাপুর চাঙ্গি বিমানবন্দরের বহুল প্রতীক্ষিত নতুন আকর্ষণ চালু হতে যাচ্ছে আগামী ১৭ এপ্রিল। ডোনাট আকৃতির কাচ দিয়ে ঘেরা ‘জুয়েল চাঙ্গি এয়ারপোর্ট কমপ্লেক্স’ বর্তমানে সেখানে থাকা ১, ২ ও ৩ নম্বর টার্মিনালকে একীভূত করবে। এর সুবাদে টিকিট, বোর্ডিং পাস ও ব্যাগেজ স্টোরেজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে যাত্রীরা তাদের ফ্লাইটে দ্রুত চেক-ইনের সুবিধা পাবেন।
জুয়েল মোট ১০ তলা। এর মধ্যে চার তলা জুড়ে সতেজ ফরেস্ট ভ্যালিতে রয়েছে হাজারও গাছ আর বিভিন্ন উদ্ভিদ। সিঙ্গাপুরে সবচেয়ে বৃহত্তম ইনডোর গাছগাছালির সংগ্রহশালার মধ্যে এটি অন্যতম। কমপ্লেক্সটিতে ২৮০টি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্যের দোকানে কেনাকাটা করা যাবে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ বিমানবন্দর টার্মিনাল যুক্ত হচ্ছে চীনের বেইজিং ড্যাক্সিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ২০১৯ সালে এর উদ্বোধন হবে। যাত্রীদের হাঁটার দূরত্ব কমিয়ে আনার জন্য নতুনভাবে সাজানো হয়েছে এই জায়গা। বেইজিং ক্যাপিটাল বিমানবন্দরের পরিবর্তে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনস ও চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইনসের মূল ঠিকানা হয়ে উঠবে বেইজিং ড্যাক্সিং। প্রতি বছর সেখানে সাতটি রানওয়েতে ১০ কোটিরও বেশি যাত্রীসেবা দেওয়া হবে। সেখান থেকে বেইজিং শহরে যাওয়ার জন্য দ্রুতগতির রেলসেবা মিলবে।
যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ড শহরের লেক ডিস্ট্রিক্ট ন্যাশনাল পার্কের প্রান্তে গড়ে উঠছে নতুন বিমানবন্দর। সেখানে টার্মিনাল তৈরি আর বেলফাস্ট, ডাবলিন ও লন্ডনে ফ্লাইট ঘোষণা এখন সময়ের ব্যাপার। কর্মীদের প্রশিক্ষণ পর্ব শেষে ২০১৯ সালে এটি চালু হবে। বিমানবন্দরটির সুবাদে সরগরম হয়ে উঠবে লেক ডিস্ট্রিক্ট ন্যাশনাল পার্ক।
আমেরিকার নিউ অরলিনসের লুইস আর্মস্ট্রং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল চালু হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা ইতোমধ্যে দু’বার পিছিয়েছে। তবে ২০১৯ সালের মে মাসেই এটি উদ্বোধন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে থাকবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। এজন্য ব্যয় হচ্ছে ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি। এর কিছু অংশ যাচ্ছে বিমানবন্দরটির বর্তমান অবকাঠামো পরিবর্তনের পেছনে।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ৭ কোটি ৬৫ লাখ বর্গমিটার জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল এক বিমানবন্দর। দিনে ২ লাখসহ প্রতি বছর ১৫ কোটি যাত্রীকে সেবা দিতে সক্ষম হবে এটি। সেখানে একছাদের নিচে থাকবে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ টার্মিনাল।
এ বছরের ২৯ অক্টোবর এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। তবে সেখানে তুর্কি কয়েকটি এয়ারলাইনের বিমান চলাচল কার্যক্রম চলছে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় আকাশসেবা সংস্থা তার্কিশ এয়ারলাইনস শনিবার (৬ এপ্রিল) থেকে নতুন বিমানবন্দরে তাদের কার্যক্রম স্থানান্তর করেছে।
মুরচিয়া-করভেরা বিমানবন্দর (স্পেন)
এ বছরের জানুয়ারিতে চালু হয় স্পেনের মুরচিয়া-করভেরা বিমানবন্দর। এখন সেখানে বাণিজ্যিক বিমানের কার্যক্রম চলছে। দেশটির রাজা ষষ্ঠ ফেলিপে এটি উদ্বোধন করেন। এর পেছনে ব্যয় হয়েছে ৫৬ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪ হাজার ৭৩৮ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
সূত্র: সিএনএন