কক্সবাজার ও পতেঙ্গা থেকে সেন্টমার্টিনে সরাসরি পর্যটকবাহী জাহাজ

কক্সবাজার থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিনে পর্যটক নিয়ে যাতায়াত শুরু করলো এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস। কক্সবাজারে বিমানবন্দর সড়কের বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে রবিবার (২১ নভেম্বর) সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে যাত্রা করে দুপুর ১টায় সেন্টমার্টিন পৌঁছায় বিলাসবহুল জাহাজটি। এরপর আড়াই ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেয় এই নৌযান।

কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের উদ্যোগ ও পরিচালনায় এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস যাত্রা শুরু করেছে। এটি নিজস্ব ডকইয়ার্ডে একটি অত্যাধুনিক বিলাসবহুল জাহাজ হিসেবে প্রস্তুত করেছে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স। প্রায় ৫৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১১ মিটার প্রশস্ত এই নৌযানে মূল প্রপালেশন ইঞ্জিন দুটি। আমেরিকার বিখ্যাত কামিন্স ব্র্যান্ডের এই ইঞ্জিনের একেকটির ক্ষমতা প্রায় ৬০০ বিএইচপি। জাহাজটি ঘণ্টায় প্রায় ১২ নটিক্যাল মাইল গতিতে ছুটতে পারে।

এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেসে রয়েছে ১৭টি ভিআইপি কেবিন। জাহাজে তিন শাখার প্রায় ৫০০ আসনে বসতে পারেন যাত্রীরা। এছাড়া আছে কনফারেন্স রুম, ডাইনিং স্পেস, সাগরমুখো ব্যালকনিসহ আধুনিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা।

আগামী ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ওয়াটার বাস টার্মিনাল থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে একই প্রতিষ্ঠানের আরেক বিলাসবহুল জাহাজ ‘এমভি বেওয়ান’। এটিও চলতি পর্যটন মৌসুমে চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিনের মধ্যে নিয়মিত চলাচল করবে। 

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশে পর্যটনের সম্ভাবনা ক্রমে ডানা মেলছে। সম্প্রতি এই শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেন প্রকৌশলী এম এ রশিদ। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন ভ্রমণে বিলাসবহুল জাহাজের যাত্রার মাধ্যমে পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন এই উদ্যোক্তা। 

পর্যটকদের বরাবরই টানে পাহাড় ও সমুদ্র। সাগরের বিশালতার কাছে গেলেই প্রকৃতি সবাইকে আপন করে নেয়। তাই বিশ্বের বৃহত্তম সৈকত কক্সবাজারের গুরুত্ব অন্যতম। কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে সাগরবক্ষের ক্ষুদ্রাকৃতির নয়নাভিরাম প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, যা বিশ্বের অন্যতম সুন্দর প্রবালদ্বীপ হিসেবে পরিচিত। ফলে কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন ভ্রমণপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়।

কিন্তু কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করতে পর্যটকদের পাড়ি দিতে হতো টেকনাফের এবড়োথেবড়ো বিরক্তিকর দীর্ঘ স্থল পথ। এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস সেই একঘেঁয়ে যাত্রাকে নীল সমুদ্রের নান্দনিক ভ্রমণে রূপ দিয়েছে। নিঃসন্দেহে যা এক বিরল সুযোগ ও সম্ভাবনার পদধ্বনি।