মিনহাজ জানান, সখিনা খাতুন বর্তমানে তার গুলশানের বাসাতেই রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়।
তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মা এখনও জানেন না জুলহাজ নেই। মাকে জানানো হয়েছে জুলহাজ বিদেশে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরবে। মায়ের স্মৃতিশক্তি আগে থেকেই একটু কম। তারপরও মাঝে মাঝে জুলহাজের বিষয় জানতে চায়। আমরা বিদেশে চিকিৎসার কথাই বলি। তার শারীরিক অবস্থাও ভালো না।’
গত ২৫ এপ্রিল বিকালে রাজধানীর কলাবাগানে বাসায় দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে ইউএসএআইডি’র কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান (৩৫) ও তার বন্ধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাহবুব তনয়কে (২৫)। জুলহাজ সমকামীদের অধিকার বিষয়ক সাময়িকী ‘রূপবান’ এর সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আর তনয় লোকনাট্য দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় ওই বাসায় জুলহাজের মা সখিনা খাতুন ও গৃহপরিচারিকা ছিলেন। দুর্বৃত্তরা যখন চাপাতি দিয়ে জুলহাজকে আঘাত করতেছিল তার চিৎকারে ঘুমে থাকা সখিনা খাতুন ডাইনিং থেকে দৌড়ে এসে ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এসময় মায়ের গায়ে চেয়ার ছুড়ে মারেন দুর্বৃত্তরা। কয়েক মিনিটের মধ্যে জুলহাজ ও তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় তারা। এরপর মা নিজেই ছেলের রক্তাক্ত দেহ টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ছেলেকে আর টেনে তুলতে পারেননি। স্বজনরা এসেও দেখেছেন মা ছেলের নিথর দেহের পাশে। পরে সন্ধ্যার দিকে তাকে গুলশানের বড় ছেলের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ইমন বলেন, ‘মা আমার কাছেই আছেন। মায়ের কাছে এ বিষয়ে কোনও কিছু জানতে চাইনি। আমরা তাকে এসব বিষয়ে মনে করিয়ে দিতে চাচ্ছি না।’
এ ঘটনায় ইমন বাদী হয়ে ওইদিন রাতেই কলাবাগান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পর তদন্তকারী কোনও ব্যক্তির সঙ্গে তার আর কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন ইমন।
তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে তদন্ত সংশ্লিষ্ট এখনও কেউ কথা বলেননি। আমাদের কাছে কোনও বিষয় জানতেও চাওয়া হয়নি। মামলার তদন্তের কোনও অগ্রগতিও আমি জানি না। যেখানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ফোন করে এই হত্যার বিচার চেয়েছেন, সেখানে আমাদের বিচার চাওয়ার কিছু নেই।’
ঘটনার পর কলাবাগান এলাকার কয়েকটি বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জব্দ করেছে পুলিশ। তা দেখে কয়েকজনকে শনাক্তের চেষ্টা করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে পুলিশ যে ব্যাগটি ছিনিয়ে রেখেছে তা থেকে সংগৃহীত আলামত দিয়ে হত্যাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা করছে তদন্তের দায়িত্বে থাকা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। এজন্য তিনি সময় চেয়েছেন।
/এআরআর/এসটি/ এএইচ/