রিশার ঘাতক ওবায়দুল কোথায়?

 ওবায়দুল খান

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার রিশার হত্যাকারী ওবায়দুল খানকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার পরপরই সে ঢাকা থেকে পালিয়েছে। এখন দিনাজপুরে রয়েছে বলে জানায় রিশার পরিবার। এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গত বুধবার (২৪ আগস্ট) উইলস ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনের ফুটওভার ব্রিজে রিশাকে ছুরিকাঘাত করে বৈশাখী টেইলার্স কাটিং মাস্টার ওবায়দুল খান। গুরুতর আহতাবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর  রবিবার (২৮ আগস্ট) রিশা মারা যায়।

এ ঘটনার পরদিন  রিশার  মা তানিয়া হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে। প্রথম দায়ের করা এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, প্রায় সাত মাস আগে ড্রেস বানাতে গেলে টেইলার্সে পরিবারের মোবাইল ফোন নাম্বার দেওয়া হয়। আর সেই মোবাইল ফোন নাম্বারের সূত্র ধরেই রিশাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল ওবায়দুল। একপর্যায়ে নাম্বারটি বন্ধ করে দিলে ওবায়দুল আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত  ২৪ আগস্ট উইলস ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনের ফুটওভার ব্রিজে রিশাকে ছুরিকাঘাত করে ওবায়দুল।

এদিকে, ওবায়দুল গ্রেফতার না হওয়ায় রিশার পরিবার ক্ষোভ  জানিয়েছে। রিশার বাবা মো. রমজান হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফোনে ছেলেটা আমার বিরক্ত করার কারণে ওই মোবাইল বন্ধ করে দেই। কিন্তু এত মাস পরও যে ওই ছেলে এমন রূপ ধারণ করবে, তা বুঝতে পারিনি।’

বৈশাখী টেইলার্সের মালিকের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ওবায়দুল খান  দুই মাস আগে টেইলার্সের কাজ ছেড়ে দেয়।

সুরাইয়া আক্তার রিশা

রিশার বড় মামা মুন্না সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘টেইলার্সের ছেলেটা বর্তমানে দিনাজপুরে আছে বলে জানতে পেরেছি। ঘটনার পর পুলিশ টেইলার্সের মালিকরে ধইরা ছেড়ে দিল। আর ওরে গ্রেফতারই করতে পারলো না। তাদের খুঁটির জোর কোথায়, সেইটা আপনারা বের করেন প্লিজ।’ তিনি  বলেন, ‘সে খুবই প্রযুক্তিবান্ধব বলে মনে হচ্ছে। ফেসবুকে রিশার ছুরিকাহত হওয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ায় সে সতর্ক হয়ে যায়। গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পেরেছি, সে এখন দিনাজপুরে অবস্থান করছে। কিছুক্ষণের জন্য তার ফোনটি খোলা হয়েছিল, তখনই তার মোবাইল  ফোন ট্র্যাক করে তার অবস্থান জানা গেছে। আমরা এখন আশঙ্কায় আছি, সে না আবার সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যায়। এ জন্য সবার কাছে সহযোগিতা কামনা করছি। রিশার হত্যাকারী যেন কোনওভাবেই দেশ ত্যাগ না করতে পারে, সেজন্য আমরা পুলিশের কাছেও সাহায্য চাই।’

এদিকে, ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে, সে সর্বশেষ দিনাজপুরে অবস্থান করছে বলে তথ্য রয়েছে।তার ঠিকানা পাওয়া যাচ্ছিল না, এমনকী যেখানে কাজ করতো, সেখানেও ঠিকানা ছিল না। বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।

এদিকে, রিশা হত্যার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল।  শিক্ষার্থীরা সেখানে সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে রিশা হত্যার বিচার দাবি করে।

আরও পড়ুন: এ কান্নার জবাব কী?

/এমএনএইচ/