মামলা অনুপাতে বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয় না: প্রধান বিচারপতি

 

সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (ফাইল ছবি: সংগৃহীত)বিভিন্ন সেক্টরে দেশ উন্নত হলেও মানের দিক থেকে দেশের বিচার বিভাগকে শূন্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেনে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে মামলার সংখ্যা অনুপাতে বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয় না। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই মামলার অনুপাতে বিচারক নিয়োগ হয়। প্রতিবেশী দেশ ভারতের মামলার তুলনায় আমাদের বিচারপতিদের সংখ্যা অর্ধেক।’ শনিবার (২৯ জুলাই) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানাকে আজীবন সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাই, আপিল বিভাগে আরও ৩ জন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার জন্য। আমাদের দেশে একটা রেওয়াজ আছে, পলিটিক্যাল সরকার ক্ষমতায় এসে হাইকোর্ট বিভাগে ইচ্ছামতো বিচারপতি নিয়োগ দেন। হাইকোর্টের বিচারপতিদের একটা নির্দিষ্ট সংখ্যা থাকতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলাকে নির্বাহী বিভাগ রাজনৈতিক বক্তব্য বলে মনে করলেও এ বিষয়ে কথা বলে যাব।’

আইনমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবন ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। আমি যে চেয়ারে বসি, সেখানে বৃষ্টির পানি পড়ে। নতুন একটি এনেক্স ভবন না করলে মাঠে বসে বিচার কাজ করতে হবে। মাননীয় মন্ত্রী, বিচার বিভাগ কিভাবে  চলবে?’

এসকে সিনহা বলেন, ‘নারী বিচারকদের পথ প্রদর্শক হচ্ছেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। পৃথিবীর যেকোনও দেশের চেয়ে আমাদের দেশে নারী বিচারকেরা অগ্রগামী। আমি চেষ্টা করছি, নারী বিচারপতিদের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য। সরকার এগিয়ে এলেই হাইকোর্টে আরও নারী বিচারক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা এ দেশ এবং বিচার বিভাগের ইতিহাসের অংশ। তিনি এদেশের বিচার বিভাগের অহঙ্কার। তাকে অনুসরণ করে অনেক নারী এই পেশায় এসেছেন। আজ তাই দেশে ২৪ শতাংশ নারী বিচারক রয়েছেন।’

বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা বলেন, ‘আমি আমার বিচারিক জীবনে ন্যায়বিচার করে গেছি। কখনও ইচ্ছাকৃতভাবে কিংবা অবহেলায় ভুল বিচার করিনি।’ নারী বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রিয় নারী বিচারকেরা মনে রাখবেন, বিচারকের জীবন মানেই ন্যায় বিচারের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়া। আর এই দায়িত্ব পালন করা খুব কঠিন ও পরিশ্রমের।’

/এমটি/ এমএনএইচ/