র্যাব-১১-এর এই সিনিয়র সহকারী পরিচালক বলেন, ‘মিজান বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে জঙ্গিবাদ বিস্তার করতে চেয়েছিল। সাভারের মতো টেকনাফের কুতুপালং এলাকায় জেএমবি’র দাওয়াতি কার্যক্রমের জন্য নিজস্ব একটা বলয় তৈরি করতে চেয়েছিল সে। এ জন্য একমাস আগে এক রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করে।’ তবে ওই রোহিঙ্গা নারীকে আটক করতে পারেনি র্যাব।
কক্সবাজার টেকনাফের কুতুপালং এলাকায় মিজান একাধিকবার যাতায়াত করেছিল বলে জানান র্যাব কর্মকর্তারা। তারা বলেন, এ দফায় বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা আসা শুরুর আগেও মিজান কুতুপালং গিয়েছিল। রোহিঙ্গারা আসার পরও কয়েকবার গিয়েছে। তার উদ্দেশ্য ছিল রোহিঙ্গাদের মধ্যে জঙ্গিবাদ বিস্তার। মিজান জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট হয় নিজে নিজেই। শুরুতে ‘আবদুর রউফ’ নামে একজনের বই পড়ে জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ে। পরবর্তী সময়ে জঙ্গি কার্যক্রমে সরাসরি সম্পৃক্ত হয় জঙ্গি নেতা জসিম উদ্দিন রাহমানির হাত ধরে। একসময় জসিম উদ্দিন রাহমানি গ্রেফতারের পর সে দাওয়াতি কাজ অব্যাহত রাখে এবং নিজের একটি বলয় তৈরি করে। যেখানে সাত জন সদস্য ছিল। মিজান ছিল সেই বলয়ের দাওয়াতে আমির। র্যাবের ভাষ্য, এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জনকে জেএমবিতে জড়িয়েছে মিজান।
জঙ্গিবাদের সঙ্গে মিজানের সম্পৃক্ততা সম্পর্কে র্যাব কর্মকর্তারা জানান, সে ২০০৯ সালে আবদুর রউফ নামে একজনের বই পড়ে উগ্রবাদে আকৃষ্ট হয়। একসময় জসিম উদ্দিন রাহমানির ধানমন্ডির হাতেমবাগ মসজিদে যাতায়াত শুরু করে সে। মিজান শিষ্য হিসেবে দীক্ষা নেয় তার। একপর্যায়ে উগ্রতার আদের্শে উজ্জীবিত হয়ে জসিম উদ্দিন রাহমানির হাত ধরে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয় এবং সাভারে দাওয়াতি কাজ শুরু করে। পরবর্তী সময়ে জসিমউদ্দিন রাহমানি গ্রেফতার হলে মিজান সাভার এলাকায় জেএমবির দাওয়াতি কাজ অব্যাহত রাখে। একইসঙ্গে নিজস্ব বলয় তৈরি করে সাভার এলাকার দাওয়াতি আমির হিসেবে কাজ করে আসছিল।
২০১৪ সাল থেকে সাভাবে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে সেটা পরিচালনা করছিল মিজানুর রহমান। র্যাব জানায়, ২০০৩ সালে সে সাভারের একটি মাদ্রাসা হতে দাখিল পাস করে এবং ২০১২ সালে ঢাকার একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে। ২০০৫ সাল থেকে ঢাকার সাভার এলাকার আইডিয়াল স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করে। এছাড়া ২০১৪ সাল থেকে সাভারে নিজস্ব মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে পরিচালনা করে আসছিল।
মিজানের সঙ্গে ইব্রাহীম খলিলকে (৩০) গ্রেফতার করে র্যাব। সে ২০১৬ সাল থেকে সাভারের একটি মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করছিল। র্যাব জানায়, ২০১০ সালে মিজানের সঙ্গে পরিচয় হয় ইব্রাহিমের। আর মিজানই জসিম উদ্দিন রাহমানির সঙ্গে ইব্রাহীমকে পরিচয় করিয়ে দেয়। ২০১১ সালে মিজানের মাধ্যমেই জেএমবিতে যোগ দেয় এবং সাভার এলাকায় জেএমবির দাওয়াতি কাজ শুরু করে। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালে মিজানের হাত ধরে জেএমবি (সারোয়ার) গ্রুপে দাওয়াতি কাজ করতে থাকে। সে তার ইমামতি পেশার পাশাপাশি ফরিদপুর, কক্সবাজারসহ একাধিক জেলায় জেএমবির দাওয়াতি কাজ করছিল। মিজানের দাওয়াতি বলয়ের সাত সদস্যের একজন সক্রিয় সদস্য ছিল ইব্রাহীম।