পেটে করে পাচার, ৪৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক ৪

ইয়াবা পাচারকারী চক্রের চার সদস্যকলার মধ্যে ইয়াবা ভরে সেই কলা খেয়ে ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িত একটি চক্রের চার সদস্যকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪৮ হাজার একশ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ উপঅঞ্চলের সহকারী পরিচালক (এডি) শামসুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার (১৪ মার্চ) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) সকাল পর্যন্ত রাজধানীর কদমতলী, গুলিস্তান ও খিলগাঁও এলাকায় পৃথক দুই অভিযানে ওই চার জনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে কদমতলী থানাধীন মুরাদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৯ হাজার একশ পিস ইয়াবাসহ মো. জুলহাস তালুকদার (৪৫) ও শেখ মো. নজরুল ইসলামকে (৪০) আটক করে অধিদফতর।
এর আগে, অন্য এক অভিযানে বুধবার রাতে গুলিস্তানের রাজ হোটেলের সামনে থেকে ৮ হাজার পিস ইয়াবাসহ মো. আমজাদ হোসেন সিকদার (৪৪) ও তার স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে (২৮) আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খিলগাঁওয়ের ৪৮৫, সি ব্লকের ভাড়া ফ্ল্যাট থেকে মজুদ করা ২১ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছে, কক্সবাজার থেকে তারা ইয়াবা নিয়ে আসত ঢাকায়। এর জন্য ইয়াবার গায়ে বিশেষ কায়দায় স্কচ টেপ পেঁচিয়ে ক্যাপসুল আকৃতি দেওয়া হয়। এরপর সেই ইয়াবা কলার মধ্যে ভরে বাহকদের খাওয়ানো হয়। ইয়াবাসহ কলা খেয়ে বাহকরা সেগুলো ঢাকা বয়ে আনে। ঢাকায় আসার পর বিশেষ এক ধরনের মেডিসিন ব্যবহার করে ইয়াবাগুলো পেট থেকে পায়ু পথে বের করে আনা হয়। পরে সেগুলো একত্রিত করে বিক্রি করে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। এই চক্রে ৮ থেকে ১০ জন বাহক কাজ করছে বলে জানায় আটক ব্যক্তিরা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ উপঅঞ্চলের এডি শামসুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা কক্সবাজার থেকে ইয়াবা এনে ঢাকার মাদক বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করত। সেখান থেকে ইয়াবা বহন করে আনার জন্য ব্যবহার করত অভাবীদের। বাহকদের বিশেষ কায়দায় কলার সঙ্গে ইয়াবা খাইয়ে পেটের ভেতরে রেখে সেগুলো ঢাকায় আনা হতো।’
এডি শামসুল আলম জানান, আসামি জুলহাস তালুকদার ও নজরুল ইসলাম দু’জনই সিলভারের হাড়ি-পাতিলের ব্যবসার আড়ালে ইয়াবার ব্যবসা করত। আর আমজাদ হোসেন সিকদার ও তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার দু’জনই ইয়াবা এনে তাদের ফ্ল্যাটে মজুদ করত। টেকনাফের বড়ইতলার মো. শাকের ওরফে শাকের মামুর কাছ থেকে তারা সংগ্রহ করত ইয়াবা। শাকের আবার ইয়াবা আনত মিয়ানমার থেকে।
জানা গেছে, গ্রেফতার জুলহাস তালুকদারের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার জাহানাবাদ গ্রামে। তার বাবা মৃত সোহরাব তালুকদার। রাজধানীর কদমতলীর মুরাদপুর মাদ্রাসা রোডের ৩৩/১ আয়েশা ভিলায় থাকে সে। একই গ্রামের মৃত শেখ আব্দুল বারেকের ছেলে নজরুল ইসলাম। মুরাদপুর হাইস্কুল রোডের ১৪৩/১ নম্বর বাসায় সে থাকত। অন্যদিকে, আমজাদ হোসেন সিকদার ও তার স্ত্রী সেলিনা আক্তারের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। ঢাকায় খিলগাঁওয়ে একটি ফ্ল্যাটে তারা ভাড়া থাকে।
আটক চার জনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় নিয়মিত মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান এডি শামসুল আলম।
আরও পড়ুন-
বনানীর ধর্ষণ মামলার আসামি বিল্লালের জামিন মঞ্জুর
ফ্লাইট ক্যাটারিংয়ের গাড়ি থেকে ৯ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার,আটক ২