কয়লা খনির সাবেক ৮ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব

দুদক

বড়পুকুরিয়া কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনায় কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক তিন জিএম ও পাঁচ এমডিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোম (১৩ আগস্ট) ও মঙ্গলবার তাদের দুদকে উপস্থিত হতে নোটিশে বলা হয়েছে। রবিবার এ নোটিশটি পাঠানো হয়েছে বলে জানান দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।
কয়লা খনির সাবেক জিএম (মাইনিং) মীর আব্দুল মতিন, জিএম (সারফেস অপারেশন) মো. সাইফুল ইসলাম, সাবেক এমডি মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও মো. মাহবুবুর রহমানকে সোমবার এবং সাবেক এমডি খুরশিদুল হাসান, কামরুজ্জামান, মো. আমিনুজ্জামান ও সাবেক জিএম (মাইনিং) মো. মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার তলব করা হয়েছে।
খনি থেকে এক লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ মেট্রিক টন কয়লা গায়েবের ঘটনায় গত ২৪ জুলাই পার্বতীপুর মডেল থানায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে ১৯ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, খনি উন্নয়নের সময় (২০০১) থেকে ১৯ জুলাই ২০১৮ পর্যন্ত মোট এককোটি একলাখ ৬৬ হাজার ৪২ দশমিক ৩৩ মেট্রিক টন কয়লা উৎপাদন করা হয়েছে। উৎপাদিত কয়লা থেকে পার্শ্ববর্তী তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬ লাখ ৮৭ হাজার ২৯ দশমিক ২৯ মেট্রিক টন কয়লা সরবরাহ, বেসরকারি ক্রেতাদের কাছে ডিও’র মাধ্যমে ৩৩ লাখ ১৯ হাজার ২৮০ দশমিক ৩৭ মেট্রিক টন কয়লা বিক্রি এবং কয়লা খনির বয়লারে ১২ হাজার ৮৮ দশমিক ২৭ মেট্রিক টন কয়লা ব্যবহার করা হয়। কয়লার উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার হিসাব করলে ১৯ জুলাই কোল ইয়ার্ডে রেকর্ডভিত্তিক কয়লার মজুত দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন। কিন্তু বাস্তবে মজুত ছিল প্রায় ৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। অর্থাৎ ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন কয়লা ঘাটতি রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৩০ কোটি টাকা বলে জানানো হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাকি ১৫ জন আসামি অনেক আগে থেকেই তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে সংঘটিত কয়লা চুরির ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে অনুমিত হয়।
কয়লা উধাওয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ জুলাই তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিটিকে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার কথা বলা হয়েছে। কমিটির প্রধান উপ-পরিচালক শামসুল আলম এবং অন্য দুই সদস্য হলেন দুদকের সহকারী পরিচালক এএসএম সাজ্জাদ হোসেন ও উপ-সহকারী পরিচালক এএসএম তাজুল ইসলাম।