শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে লাঞ্ছনা মামলায় অব্যাহতি পেলেন সেলিম ওসমান

সেলিম ওসমাননারায়ণগঞ্জে শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে লাঞ্ছনার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ড. একেএম এমদাদুল হক এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত মামলার অপর আসামি মো. অপুর অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে অভিযোগে চার্জ গঠন করে আগামী ১৮ ডিসেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন।



চার্জ গঠনের শুনানিকালে আসামি সেলিম ওসমান ও মো. অপু এবং শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ওই আদালতে হাজির হন।
শুনানিকালে শ্যামল কান্তি আদালতকে জানান, ‘সেলিম ওসমান নিজে তার কানে চড় মেরে শাররীকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ কারণে দুই কানেই তিনি শুনতে পান না। কানে হেয়ারিং লাগিয়ে তাকে চলতে হয়।’
অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুলও শ্যামল কান্তির বক্তব্য সমর্থন করে বলেন, ‘শিক্ষকরা জাতি গড়ার কারিগর। তাদের এভাবে অপমান করা মানে গোটা জাতিকে অপমান করা। যেহেতু মামলার জুডিশিয়াল প্রতিবেদনে দুই জনের বিরুদ্ধেই শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে মারধর করে আহত করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই উভয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হোক।’
অন্যদিকে আসামি সেলমি ওসমানের পক্ষে ব্যারিস্টার মো. রায়হান, অ্যডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান ও মোজাম্মেল হক শুনানি করেন। শুনানি শেষে বিচারক আসামি সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার মতো কোনও উপাদান না থাকায় তাকে অব্যাহতি দেন।
অন্যদিকে আসামি মো. অপুর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ডবিধির ৩২৩ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন।

২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে ঢাকার সিজেএম আদালতে বিচারের জন্য বদলির নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ১৩ মে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি প্রকাশ পেলে দেশজুড়েনিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমান সেদিন ওই শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মর্মে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতেও তা দেখা যায়।
২০১৬ সালের ১০ অগাস্ট ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জের স্কুল শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় পুলিশ প্রকৃত দোষিদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে পুরো ঘটনা বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।