বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উত্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে আইনজীবী শেখ ওমর শরীফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বোরকা পরাকে কেন্দ্র করে ছাত্রীরা বিভিন্নভাবে নিগ্রহের শিকার হন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আমরা গত ডিসেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে একটি আইনি নোটিশ পাঠাই। কিন্তু সেই নোটিশের কোনও জবাব না পাওয়ায় আমরা হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছি।’
রিট আবেদনে অভিযোগ করা হয়, দেশের বিভিন্ন স্কুলে বোরকা পরিধানকারী ছাত্রীরা নিগ্রহের শিকার হওয়ায় তারা সংক্ষুব্ধ হয়েছেন। সম্প্রতি চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা থানার মাইজপাড়া মাহমুদুন্নবী চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী বোরকা পরায় তাকে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে দেননি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ কাশেম। এ ঘটনার পরদিন সেই ছাত্রীর মা বোরকা পরার অনুমতির জন্য স্কুলে গেলে তাকেও বের করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিও আলোচনার জন্ম দেয়। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্কুলে সংঘটিত একই ধরনের আরও কিছু ঘটনা বিভিন্ন সময়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
রিটে দাবি করা হয়, ইসলামসম্মত পোশাক পরিধান করা সব মুসলমানের জন্য বাধ্যতামূলক। স্কুল ইউনিফর্মের ওপর নিজের পছন্দমতো পোশাক পরার অধিকার প্রত্যেকের রয়েছে। কেননা, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে সব নাগরিকের ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে সব নাগরিককে যেকোনও ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার দেওয়া হয়েছে এবং সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তাই স্কুল ইউনিফর্মের পাশাপাশি বোরকা পরতে না দিয়ে স্কুলছাত্রীদের সাংবিধানিক অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ নাগরিক ও মানবাধিকারকর্মী হিসেবে রিট আবেদনকারীরা এসব ঘটনায় সংক্ষুব্ধ হয়েছেন।
রিটে দেশের স্কুলগুলোতে স্কুল ইউনিফর্মের ওপর বোরকা পরিধানে ছাত্রীদের বাধা না দেওয়ার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে এবং ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্কুলে ছাত্রীদের বোরকা পরায় বাধাদানকারী স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি ও আরজি জানানো হয়েছে।