অর্থপাচার মামলায় মামুনের সাত বছর কারাদণ্ড

গিয়াস উদ্দিন আল মামুনবিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগের মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বন্ধু ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ১২ কোটি টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন আসামির উপস্থিততে এ রায় ঘোষণা করেন।

এ মামলার দণ্ডের পাশাপাশি মামুনের লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকের হিসাবে থাকা মানিলন্ডারিং করা ৪ লাখ ১৮ হাজার ৮৫৩.৪৭ ব্রিটিশ পাউন্ড স্টার্লিং যা বাংলাদেশি টাকা ৬ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা রাষ্ট্রের অনূকুলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বাজেয়াপ্তের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে অবহিতকরণসহ বাজেয়াপ্তকৃত সম্পত্তির তফসিলসহ সব বিবরণ সরকারি গেজেটে প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ টাকা লন্ডন থেকে বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়ে রাষ্ট্র আইন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করারও নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।  

এদিন, দুদকের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। আর আসামিপক্ষে ছিলেন জাহেদুল ইসলাম কোয়েল, হেলাল উদ্দিন, আকবার হোসেন জুয়েল প্রমুখ আইনজীবী।

দুদকের পক্ষের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানান, আদালত মানিলন্ডারিং আইন ২০০২ এর ১৩ (২) ধারা অনুযায়ী আদালত সর্বোচ্চ দণ্ড প্রদান করেছেন। রায়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহেদুল ইসলাম কোয়েল জানান, এ আদেশের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।

আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে বলে রাষ্ট্রপক্ষ সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করেন। আর দিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। এজন্য তিনি খালাস পাবেন। 

মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিটিএল ও গ্লোব ফার্মা সিউটিক্যালের চেয়ারম্যান এম শাহজাদ আলীর রেলওয়ের সিগন্যালিং আধুনিকীকরণের টেন্ডার পান। কিন্তু কার্যাদেশ চূড়ান্ত করার সময় মামুন তার কাছে অবৈধ কমিশন দাবি করেন। নতুবা কার্যাদেশ বাতিল করার হুমকি দেন। ওই হুমকি দিয়ে মামুন ২০০৩-২০০৬ সালের মধ্যে ৬ কোটি, ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬২ টাকা নেন। পরে তা বাংলাদেশ থেকে লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকে পাঁচার করেন।

ওই অভিযোগে ২০১১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ক্যান্টনমেন্ট থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম মামলাটি করেন।

২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে যৌথ বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, অর্থপাচার, করফাঁকিসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও বেশ কিছু মামলা রয়েছে। ২০১৩ সালে মামলাগুলোর মধ্যে তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে আরেকটি অর্থপাচার মামলায় মামুনের ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।